• Saturday, December 21, 2024

গোমস্তাপুরে মসজিদে সামাজিক দুরত্ব মানতে বলায় হামলা

  • May 10, 2020

Share With

মসজিদে জুম্মার নামাজে সামাজিক দুরত্ব মেনে নামাজ আদায় না করার প্রতিবাদ করায় একটি পরিবারের উপর হামলা হয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জে। শুক্রবার দুপুরে জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর পৌরসভার হামিদপাড়া-কলোনী পশু হাসপাতালের সামনে মসজিদের সামনের একটি বাড়িতে হামলা হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, শুক্রবার জুম্মার নামাজে হামিদপাড়া-কলোনী জামে মসজিদে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সামাজিক দুরত্ব মেনে নামাজ আদায় হয়নি। নামাজ শেষে স্থানীয় যুবক আহসান ও তার ভাই মহসিন এর প্রতিবাদ করলে মসজিদেই মহল্লার মড়ল ও মসজিদের সভাপতি মো. হুমায়ন তাদেরকে বিভিন্নভাবে গালিগালাজ ও ভয়ভীতি দেখায়। এসময় তাদের প্রতিবেশী মো. আলম মসজিদে উচ্চ স্বরে কথা না বলে ঝামেলা না করার জন্য অনুরোধ করে। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে পূর্ব শত্রুতার জেরে নিজ বংশের লোকজন নিয়ে আলমের বাড়িতে হামলা করে এলাকার মোড়ল প্রভাবশালী ব্যক্তি হুমায়ুন ও তার লোকজন। বর্তমানে বাড়ি থেকে বের হতেই পারছেন না আলমের পরিবারের সদস্যরা। নানাভাবে প্রাননাশের হুমকি দিচ্ছে হুমায়নের লোকজন। পরিবারের নিরাপত্তা ও সঠিক বিচার চেয়ে গোমস্তাপুর থানায় মামলা করেছেন মো. আলম।

 

শুক্রবার তারাবি’র নামাজ চলা অবস্থায় ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, স্বাভাবিক সময়ের মতোই চলছে নামাজ। সামাজিক দুরত্ব মানা তো দূরের কথা, গাদাগাদি করে নামাজ আদায় করছেন মুসল্লিরা। হামলায় আলমকে লাটি-রড দিয়ে শরীরে আঘাত এবং বাড়ির বেলকুনি ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে আলমের স্ত্রী মাসুদা বেগম, দুই মেয়ে আইরিন আক্তার ও মাহফুজা আক্তার বৃষ্টিকে ইটপাটকেল দিয়ে আঘাত করে হুমায়নের লোকজন। পরে আহত অবস্থায় তাদেরকে গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায় স্থানীয়রা।

 

হামলায় গুরুতর আহত কৃষক মো. আলম বলেন, আমরা গরিব, তাই আমাদেরকে অন্যায়ভাবে দরজা-জানালা ভেঙ্গে বাড়িতে প্রবেশ করে অত্যাচার করেও, অবাধে তারা ঘুরে বেড়াচ্ছে। আল্লাহই জানে কি হবে। বাড়িতে দুইটা যুবতী মেয়ে, খুব শঙ্কার মধ্যেই আছি। না জানি, আবার কখন হামলা করে।

 

আলমের স্ত্রী মাসুদা বেগম জানান, বিনা অপরাধে শুধুমাত্র মসজিদের বিষয় নিয়েই তারা এই হামলা চালিয়েছে। আমাকে ও আমার দুই মেয়েকেও হামলা করতে ছাড়েনি। এমনকি ছোট মেয়ে মিস্টির গলায় থাকা সোনার মালা ছিনিয়ে নেয় তারা।

 

আলমের বড় মেয়ে আইরিন আক্তার বলেন, শুক্রবার বিকেলে ৫০-৬০ জন মিলে হামলা চালিয়েছে। শনিবার সারাদিন আমরা বাড়ি থেকে বের হতেই পারিনি। পাশের বাড়ির ছাদ ও দরজার সামনে এসে মামলা করলে প্রাননাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে হুমায়নের লোকজন। সে গ্রামের মোড়ল, তার বিরুদ্ধে কেউ কিছু বলতে পারছে না। প্রভাবশালী হওয়ায় যা ইচ্ছে করতে পারবে।

 

সামাজিক দুরত্ব না মেনে মসজিদে নামাজ আদায়ের কথা স্বীকার করে মহল্লার মোড়ল ও মসজিদের সভাপতি মো. হুমায়ন (৫৬) শনিবার রাতে মুঠোফোনে জানান, পূর্ব শত্রুতার জেরে একটু ঝামেলা হয়েছে। কিন্তু বাড়িতে হামলার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।

 

গোমস্তাপুর থানার অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) জসীম উদ্দীন জানান, বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে এবং তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।