চাঁপাইনবাবগঞ্জে ভ্যান চালককে গলা কেটে হত্যা, গ্রেফতার ৩
- Jun 28, 2025

চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে চালক রাজু আহমেদকে গলা কেটে হত্যার পর ভ্যান ছিনতাইয়ের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ও নাচোল থানা পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা খাদেমুল ইসলাম মধুসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ । এ সময় হত্যায় ব্যবহৃত চাকু ও ছিনতাই হওয়া চার্জার ভ্যানটি উদ্ধার করা হয়।
শনিবার দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেসব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এএনএম ওয়াসিম ফিরোজ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার উত্তর সিঙ্গেরগাড়ী এলাকার খাদেমুল ইসলাম মধু, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার ফতেপুর-মসজিদপাড়ার আমানত আলী ও তার ছেলে আমিনুর রহমান।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওয়াসিম ফিরোজ প্রেসব্রিফিংয়ে বলেন, গত ২৩ জুন নাচোল উপজেলার পারিলা চাঁনপুকুর এলাকা থেকে রাজুর গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এরপর থেকেই হত্যার সঙ্গে জড়িতদের ধরতে মাঠে নামে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৬জুন) রাতে নীলফামারী থেকে গ্রেপ্তার করা হয় রাজুর হত্যাকারী খাদেমুল ইসলাম মধুকে। পরে তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী শুক্রবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয় আমিনুর ও আমানতকে। এ সময় ছিনিয়ে নেয়া রাজুর ব্যাটারিচালিত ভ্যানটি উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশের কাছে হত্যার দায় স্বীকার করেছে খাদেমুল ইসলাম মধু। তিনি পুলিশকে বলেছেন, ভ্যান ছিনিয়ে নিতেই হত্যা করা হয় রাজুকে।
ওয়াসিম ফিরোজ আরও বলেন, মধু নীলফামারী থেকে নাচোলে এসে বিয়ে করে বসবাস শুরু করে এবং বিভিন্ন স্থানে মধু সংগ্রহ করে। মধুকে সবাই একজন মধু বিক্রতা হিসেবে চিনে। মাঝে স্ত্রী তালাকের পর নাচোল রেল স্টেশন পাড়ায় বসবাস শুরু করে। সেখনেই ভ্যানচালক রাজুর সঙ্গে তার পরিচয়। তারা এক সঙ্গে মাদক সেবন করত। একসময় খাদেমুল ব্যাটারিচলিত ভ্যানটি নেওয়ার জন্য রাজুকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পূর্ব পলিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার দিন (২২ জুন) বিকালে রাজুকে চুয়ানি খাওয়ানোর কথা বলে দুইজনই একসাথে ভ্যান নিয়ে বের হয়। সন্ধ্যার পর চুয়ানি সংগ্রহ করে রাজুকে মাত্রাতিরিক্ত চুয়ানি খাওয়ায়, ফলে রাজু ভ্যানে শুয়ে পড়ে।এরপর খাদেমুল নিজেই ভ্যান চালিয়ে ফতেপুর ইউনিয়নের পারিলা গ্রামের একটি আম বাগানের পাশে ধারালো চাকু দিয়ে রাজুকে গলা কেটে হত্যা করে রাস্তার পাশে মরদেহ ফেলে ভ্যান নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে সে আমিনুর রহমানের কাছে নগদ ১৪ হাজার টাকায় রিকশা ভ্যানটি বিক্র করে তার গ্রামের বাড়ি নীলফামারী চলে যায়।
মধুকে জিজ্ঞাসাবাদে নিজেকে হত্যাকারী হিসেবে পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়েছে বলে জানান জেলা পুলিশের এই কর্মকর্তা।
তিনি আরো জানান, গ্রেপ্তার তিনজনকেই আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে। একই সাথে তাদের রিমান্ড আবেদন করা হবে।
এ ঘটনায় নিহত রাজু আহম্মেদের মা সুলতানা বেগম বাদী হয়ে নাচোল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।