• Thursday, November 21, 2024

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি

  • Dec 14, 2018

Share With

ডি এম কপোত নবী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ : চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা নিয়ে গঠিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসন। একটি বিশাল পৌরসভাসহ ১৪টি ইউনিয়ন রয়েছে এ আসনে। মোট ভোটার ৩ লাখ ৮২ হাজার ৫৮০ জন। তার মধ্যে মহিলা ভোটারের সংখ্যা হচ্ছে ১ লাখ ৯১ হাজার ৫২৪ জন। পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৯১ হাজার ৫৬ জন।

এ আসনে এবার লড়ছেন ৬ জন প্রার্থী। এরা হলেন, আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওদুদ, বিএনপির সাবেক এমপি মো. হারুনুর রশীদ, ঢাকা মহানগর জামায়াত মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল, ইসলামী আন্দোলনের আব্দুল কাদের, বিএনএফের মো. কামরুজ্জামান খান ও জাকের পার্টির মো. বাবলু হোসেন। ৬ জন প্রার্থী হলেও মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে ৩ জনের। আওয়ামী লীগের প্রার্থী আব্দুল ওদুদ ও বিএনপির হারুনুর রশীদ এবং সতন্ত্র প্রার্থী নূরুল ইসলাম বুলবুলের মধ্যে। বাকিদের তেমন লক্ষ্য করা যায় না প্রচারে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপির হারুন-অর-রশিদ ৮৫ হাজার ৪৮৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দী জামায়াতের প্রার্থী লতিফুর রহমান পান ৬০ হাজার ৪৬০ ভোট। সেবার আওয়ামী লীগ তৃতীয় অবস্থানে গেলেও ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হন আওয়ামীলীগ প্রার্থী আব্দুল ওদুদ বিশ্বাস।

তিনি ১ লাখ ১২ হাজার ৮০২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। জামায়াত চলে যায় তৃতীয় অবস্থানে। জামাত প্রার্থী ৭২ হাজার ২৯২ ভোট পেলেও এবার সেই জামায়াতকে পুনর্জীবিত করতে নতুন প্রার্থী এসেছেন ঢাকা মহানগর জামায়াতের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল। ২০০৮ সালের নির্বাচনের মতো হলে বিএনপি জামায়াতের প্রার্থী এই আসনে অবস্থান করবে। আসনটি জামায়াত, বিএনপির জন্য উন্মুক্ত থাকবে। পাশাপাশি মধ্য থেকে লাভবান হবে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর। যদি এই আসনে জামায়াতের একাধিক ভোট ব্যাংক রয়েছে বিভিন্ন এলাকায়।

এইসব ভোট ব্যাংকে হানা দিয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থী তছনছ করে দিয়েছেন। পাশাপাশি বিএনপি থেকে আসা বর্তমানের এমপি আওয়ামী লীগ প্রার্থী আব্দুল ওদুদ বিশ্বাস তার পূর্বে চিনে থাকা বিএনপির অনেক ঘাটি ভেঙ্গে দিয়ে অনেকটাই সামনের দিকে রয়েছেন। তবে এই আসনে বিএনপি জামায়াত ও আওয়ামী লীগের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩, সদর আসনিটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারন এই আসনটি একেবারে জেলা সদর। পর পর দুইবার এমপি থাকায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী আব্দুল ওদুদ বিশ্বাস সর্বক্ষেত্রে বড় ধরনের দৃশ্যমান উন্নয়ন করেছেন। এবার তিনি হ্যাট্রিক করে আওয়ামী লীগের মর্যাদা ধরে রাখতে চান। তিনি কয়েক হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন করে জনগনের মধ্যে মর্যাদার আসনে অবস্থান নিয়েছেন।

তিনি পূর্বে মূলত: বিএনপির রাজনীতি করেছেন। তার চাচাতো ভাই সাবেক এমপি বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সম্পাদক হারুনুর রশীদের হাত ধরেই রাজনীতিতে আসেন। পরে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে বিএনপি, জামায়াতের হাত থেকে আসনটি ছিনিয়ে আনেন। সেই হিসাবে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে উন্নয়নের জন্য যা চেয়েছেন তাই পেয়েছেন। তিনি যোগাযোগ, সরকারী ভবন নির্মান ও স্কুল কলেজের অবকাঠামো নির্মানে অনেক এগিয়ে রয়েছে। এ ছাড়াও একাধিক মাদ্রাসা, স্কুল কলেজ, মহানন্দা নদী খনন, ববার ড্যাম নির্মান সহ পাগলা নদীর উপর সেতু নির্মান ও চরবাগডাঙ্গাকে ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষার জন্য ইতোমধ্যে কয়েক শত কোটি টাকার বরাদ্দ পেয়েছেন।

এ-ছাড়াও চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার জন্য অর্ধ শত কোটি টাকা উন্নয়ন করে অধিকতর রাস্তা পাকা করন, ড্রেন নির্মান ও কামাল উদ্দীন স্কুলের পাশ দিয়ে হুজরাপুর পর্যন্ত একটি বড় রাস্তা নির্মানের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথে। এ ছাড়াও একটি আম বাজার সহ সোনামসজিদ পর্যন্ত সম্প্রসারিত রেল লাইন নির্মানের প্রস্তাব পাস হয়েছে। এমন কোন সেক্টর ও বিভাগ নেই যেখানে উন্নয়নের ছোয়া লাগেনি। এছাড়াও তার জনপ্রিয় তা এতটাই তুঙ্গে যে কোন মুহুর্তে কয়েক ঘন্টার নোটিশে লাখ লোকের সমাবেশ করতে পারেন। তার জনপ্রিয়তার কারনেই তিনি প্রধান মন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে উন্নয়নের জন্য মুখ খোলা মাত্রই বরাদ্দ পেয়েছেন।

বিশেষ করে তার অন্যতম কারিশমা শেখ হাসিনা সেতু নির্মান। তিনি প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে শেখ হাসিনা সেতু নির্মানের ফলে প্রায় ৮টি দূর্গম, বিচ্ছিন্ন পিছিয়ে পাড়া জনপদকে (ইউনিয়ন) জেলা শহরের সাথে সংযোগ সাধন করায় সামনের ভোটে বড় ধরনের মেরু করন করবে। শুধু তাই নয় এই বিশাল সেতু পার হতে জনসাধারণ ও জানবাহনকে কোন টোল দিতে হয়না। টোলমুক্ত এই সেতু নির্মানের ফলে বিএনপি জামায়াতের ভোট ব্যাংকে ধস নামাতে পেরেছেন নৌকার মাঝি আব্দুল ওদুদ বিশ্বাস।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী আব্দুল ওদুদ বিশ্বাস আশা করেন তিনি নির্বাচনে বিজয় ছিনিয়ে হ্যাট্রিক করবেন। ইতোমধ্যেই বিএনপির কয়েকজন নেতাকে বিএনপি প্রার্থী বাড়ী থেকে বার করে দেবার কারনে তারা দারুন ভাবে বিদ্রোহী হয়ে উঠেছেন। তাদের সমর্থকদের বিএনপি প্রার্থীকে ভোট না দেবার মটিভেশান করছে।