চালক যখন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক
- Oct 27, 2018
আলোকিত ডেস্ক: প্রাইভেট কার, ভ্যান, রিকশা কিংবা ট্রাক। কী চালাতে পারেন না তিনি! নতুন কোনো বাহন পেলে সেটি চালিয়ে দেখতে সব সময়ই আগ্রহী। বলা হচ্ছে তরুণ আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের কথা। শৈশবে বাইক নিয়ে গ্রাম-গঞ্জ ও হাওড় এলাকা চষে বেড়িয়েছেন। গিটার হাতে নিয়ে টুং টাং সুর তুলে রকস্টার হওয়ার প্রত্যয় নিয়ে বড় হয়েছেন। কিন্তু কখনো একজন মন্ত্রী ও একটি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে নিয়ে চালকের আসনে বসেননি। এবার সেই রোমাঞ্চকর ভ্রমণের অভিজ্ঞতা নিজের ঝুলিতে ভরলেন।
১৮ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার জুনাইদ আহমেদ পলককে তার চালকের আসনে দেখা গেল। ঘটনাটি গাজীপুরের চন্দ্রার ওয়ালটনের হাইটেক পার্কে। এদিন দুপুরে হেলিকপ্টার যোগে মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারকে নিয়ে পলক পৌঁছান ওই কারখানার হেলিপ্যাডে। সেখানে নেমে অভিভূত হন তারা। কেননা, ওয়ালটনের পক্ষ থেকে গার্ড অব অনার জানানোর পাশাপাশি তাদেরকে ইলেকট্রিক টুরিস্ট কারে অনুষ্ঠানস্থানে নিয়ে আসেন ওয়ালটনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামসুল আলম।
সেসময়ই বাহনটি পছন্দ মনে ধরে পলকের। এর কারণও আছে। এই টুরিস্ট যানটি বেশ মনোলোভা। মাথার উপর ছাদ। দুপাশ খোলা। এমন যান দেখতে পেলে কার না চালাতে মন চাইবে! আর তাইতো ওয়ালটনের মাদারবোর্ডসহ কম্পিউটার উৎপাদন কারখানা ভ্রমণ শেষে ওই বাহনটি চালানোর ইচ্ছে পোষণ করেন প্রতিমন্ত্রী পলক। তখন হাস্যরস করে পলক আবদারের সুরে শামসুল আলমকে বলেন, ‘ আমার ড্রাইভিং লাইসেন্স আছে। আমি এই গাড়ি আপনাদের নিয়ে চালাতে চাই। তখন শামসুল আলম আগ্রহের সঙ্গে তাকে যানটি চালনোর কায়দা কানুন শেখান। এরপর পলক চালকের আসনে সওয়ারী করেন মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার ও শামসুল আলমকে। সবুজে ঘেরা ওয়ালটন হাইটেক পার্কের চত্বর দিয়ে পৌঁছে যান প্রশাসনিক ভবন।
প্রতিমন্ত্রী, মন্ত্রী ও ওয়ালটনের শীর্ষকর্তাদের নিয়ে গাড়ি চালানোর এই দৃশ্য উপভোগ করেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা। তারা হাত নেড়ে পলককে অভিবাদনও জানান।
এর আগে মোটর বাইকে করে প্রিয়তমা স্ত্রীকে নিয়ে ভ্রমণের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেন পলক। এসব ছবিতে লাইকের বন্যা বয়েছে। এই দম্পত্তিকে শুভ কামনা জানিয়েছেন অনেকেই।
পলক প্রতিমন্ত্রী হলে কি হয়েছে! নিজ এলাকা নাটোরের সিংড়ায় রিকশা চালানোর অভিজ্ঞতাও রয়েছে তার। এসব ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। দুই চাকা, তিন চাকা ছেড়ে চার চাকাতেও তিনি সমান দক্ষ।
নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলা ট্রাক সমিতির অনুষ্ঠানে গিয়ে ট্রাক চালানোর অভিজ্ঞতাও অর্জন করেন। তথ্য প্রযুক্তি বিভাগ পরিচালনায় তার দক্ষতা যেমন প্রশংসনীয় তেমন ড্রাইভিংয়েও রয়েছে তার সমান কারিশমা।
ইনিই পলক, যিনি সহজে সাধারণ মানুষের সাথে মিশে যান। মাটিতে বসে সারেন রাতের আহার। লুঙ্গি পড়ে ঘুরে বেড়ান নিজ এলাকাতে। বন্যায় কোমড় পানিতে ভিজে বন্যার্তদের খোঁজ খবর নেন। রাত-বিরাতে অভাব-অভিযোগ কিংবা কোনো কিছু জানতে তাকে ফোন করা হলেও কণ্ঠে এতটুকুও উষ্মা প্রকাশ পায় না তার।
পলকের নির্বাচনী এলাকা সিংড়া আর রাজধানীর তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের দুরত্ব অনেকটা হলেও দুজায়গাতেই সমানতালে সময় দেন। দেশের আইসিটি খাতকে এগিয়ে নিতে ছুটে যান সিলিকন ভ্যালিতেও। আবার সিলিকন ভ্যালি থেকে প্রাপ্ত জ্ঞান ছড়িয়ে দেন সারা দেশে।
একাধারে তিনি শিক্ষক এবং ছাত্র। যেখানেই শেখার কিছু পান বিনয়ের সঙ্গে তা গ্রহণ করেন। ‘টেন মিনিট স্কুল’ এ লক্ষাধিক শিক্ষার্থীকে প্রযুক্তি সম্পর্কে জ্ঞান দেন। ব্যবহার করেন স্মার্ট ডিভাইস। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ মন্ত্রী, এমপিদের সঙ্গে সাধারণ মানুষের যোগাযোগ স্থাপনে তার জুড়ি নেই। প্রতিনিয়ত কাজ করছেন তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে সরকারি এবং বেসরকারি পার্টনারশিপে এগিয়ে নিয়ে যেতে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও রয়েছে তার সমান জনপ্রিয়তা। সর্ব কনিষ্ঠ প্রতিমন্ত্রী হিসেবে তিনি মানুষের মন জয় করে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার অন্যতম সেনাপতি। আজ বাংলাদেশ মাদারবোর্ড বানিয়েছে। তিনি এই সফলতার অংশীদারও বটে।