• Sunday, February 23, 2025

জনগণের পাশে থেকে কাজ করছে সেনাবাহিনী: প্রধান উপদেষ্টা

  • Jan 06, 2025

Share With

প্রশিক্ষণেই সর্বোত্তম কল্যাণ’, এই মন্ত্রে উদ্ধুদ্ধ হয়ে আধুনিক ও যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে দক্ষতা অর্জন করে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সেনাবাহিনী প্রস্তুত থাকবে বলে জানিয়েছেন অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

রোববার (৫ জানুয়ারি) দুপুরে রাজবাড়ী মিলিটারি ট্রেনিং এরিয়ার (আরএমটিএ) চর খাপুড়া ও চর রামনগর এলাকায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৫৫ পদাতিক ডিভিশনের ব্যবস্থাপনায় শীতকালীন ম্যানুভার অনুশীলন পরিদর্শন শেষে এ কথা বলেন তিনি।

রাজবাড়ী সামরিক প্রশিক্ষণ এলাকায় সেনাবাহিনীর ৫৫ পদাতিক ডিভিশনের মহড়ায় যোগ দেয় যুদ্ধে মোতায়েনযোগ্য ট্যাংক, কামানসহ অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র। কমান্ডো ও সকল আর্মস সার্ভিসের অংশগ্রহনে তুলে ধরা হয় প্রতিকী যুদ্ধের পরিবেশ।

মহড়ায় বিমান বাহিনীর যুদ্ধ বিমান, আর্মি এভিয়েশন বিমান, হেলিকপ্টার ও প্যারা কমান্ডোরাও অংশ নেয়। এ সময় সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান প্রধান উপদেষ্টা ড মুহাম্মদ ইউনুসকে মহড়া ঘুরে দেখান। প্রায় এক ঘন্টা সেনা মহড়া দেখেন প্রধান উপদেষ্টা।

বক্তৃতায় প্রধান উপদেষ্টা জানান, রাষ্ট্রের সব প্রয়োজনে সেনাবাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। আধুনিক ও যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে যে কোনো যুদ্ধ পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকবে সেনা বাহিনী।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা সিনেমার পর্দায় যুদ্ধ দেখি সবসময়, সম্মুখ যুদ্ধ দেখি, ইতিহাসের বহু বড় বড় যুদ্ধ আমরা সিনেমার পর্দায় দেখি। প্রথম মহাযুদ্ধের, দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের একাবারে প্রকৃত ছবিগুলো দেখি। নানা ব্যাটল তার শত্রুর সম্মুখে হয়েছে সেই দৃশ্য দেখি। করুণ দৃশ্য দেখি, সাহসের দৃশ্য দেখি। অনেকগুলো আমাদের স্মৃতিতে অমর হয়ে থাকে, সারা পৃথিবীর স্মৃতিতে অমর হয়ে থাকে। তাদের বীরত্বের জন্য এবং সাহসের জন্য। সম্পূর্ণ অসহায় অবস্থা থেকে কীভাবে পুরো জিনিসটাকে পাল্টে দিয়ে জয়কে ছিনিয়ে নিয়ে আসে, সেই দৃশ্য দেখেছি। বহু ব্যাটল পৃথিবীতে বিখ্যাত হয়ে আছে। এক একটা ব্যাটেল কীভাবে লড়াই করেছে কীভাবে জিতেছে, কীভাবে শত্রুর কাছ থেকে বিজয় ছিনিয়ে নিয়ে এসেছে-সবকিছুর প্রস্তুতি এভাবেই হয়।

তিন বলেন, আজকের এই প্রস্তুতি দেখে খুব ভালো লাগলো। যাতে এটা ক্রমাগতভাবে আমরা প্রতি মুহূর্তের জন্য প্রস্তুত থাকতে পারি সেটার জন্য। আজে যে সমস্ত ইউনিট অংশগ্রহণ করল, সেই সব সৈনিকদের অভিনন্দন জানাচ্ছি। যারা পরিচালনা করেছেন তাদেরকেও অভিনন্দন জানাচ্ছি। ক্রমাগত এটা আরও সুন্দরভাবে গড়ে উঠবে বলে আশা করছি।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এই মহরায় আসতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। একজন শান্তিকামী মানুষ হিসেবে আমি যুদ্ধের চেয়ে শান্তির মহরা দেখতে আমি বেশি আনন্দবোধ করি। তবে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে প্রস্তুতির লক্ষ্যে সামরিক বাহিনীর এই প্রশিক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আজকের এই মহড়ায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রদর্শিত দক্ষতা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। এই মহড়া দেখে আমি সেনাবাহিনী ও বিমানবাহিনীর সক্ষমতা সম্পর্কে আরও আত্মবিশ্বাসি হয়েছি।

প্রশিক্ষণ মহড়া পর্যবেক্ষণ করে দুপুরের মধ্যাহ্নভোজন শেষে দুপুর ২টা ৪৭ মিনিটে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় যান।

এর আগে বেলা ১১টা ৫৪ মিনিটে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে রওনা হন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দুপুর সাড়ে ১২টা ৩৬ মিনিটের দিকে প্রধান উপদেষ্টাকে বহন করা হেলিকপ্টারটি কালুখালীর মিলিটারি ট্রেনিং এরিয়ার চর খাপুড়ায় হেলিপ্যাডে অবতরণ করেন।

অনুশীলনস্থলে পৌঁছালে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অভ্যর্থনা জানান সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান, বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান এবং জিওসি, ৫৫ পদাতিক ডিভিশন ও এরিয়া কমান্ডার, যশোর এরিয়া মেজর জেনারেল জে এম ইমদাদুল ইসলাম।

প্রধান উপদেষ্টা অনুশীলন অবলোকন শেষে সমাপনী বক্তব্যের শুরুতেই মহান আল্লাহ তায়ালার প্রতি শুকরিয়া জ্ঞাপন করেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রশিক্ষণের এই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই এগিয়ে চলবে।

পরিশেষে, মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা অনুশীলনে অংশগ্রহণকারী সেনাসদস্যদের দক্ষতা ও উঁচুমানের প্রশিক্ষণের প্রশংসা করেন।