• Monday, December 30, 2024

জেএসসি বাংলা প্রথমপত্র বিষয়ে কিছু জেনে নিন

  • Oct 15, 2018

Share With
মানবধর্ম

আজ ‘মানবধর্ম’ কবিতা থেকে একটি সৃজনশীল প্রশ্ন উত্তরসহ ছাপা হলো।

১। জাতের নামে বজ্জাতি সব

জাত-জালিয়াৎ খেলছ জুয়া!

ছুঁলেই তোর জাত যাবে?

জাত ছেলের হাতের নয়তো মোয়া।।

ক. লালন শাহ্ কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?

খ. জাত-পাত নিয়ে বাড়াবাড়ি করা উচিত নয় কেন? -ব্যাখ্যা কর।

গ. উদ্দীপক ও ‘মানবধর্ম’ কবিতায় মানুষের যে মিল পাওয়া যায় তা আলোচনা কর।

ঘ. ‘উদ্দীপকের শিক্ষাই ‘মানবধর্ম’ কবিতার মূল প্রতিপাদ্য বিষয়’- মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।

উত্তর:

ক. লালন শাহ্ ঝিনাইদহ, মতান্তরে কুষ্টিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন।

খ. মানুষের মূল পরিচয় জাতিগত নয় তাই জাত-পাত নিয়ে বাড়াবাড়ি করা উচিত নয়। পৃথিবীতে নানান দেশে নানা ধর্ম ও বর্ণের মানুষ বসবাস করে। বেশিরভাগ মানুষ ধর্ম ও বর্ণের মধ্যে পার্থক্য করে থাকে। মানুষের মধ্যে মানবতা থাকলেই তাকে আমরা সত্যিকার মানুষ হিসেবে গণ্য করি। এ পৃথিবীতে সবাই একই রক্ত-মাংসের গড়া মানুষ। জন্ম ও মৃত্যুকালে জাতের কোন চিহ্ন থাকে না। তাই জাত-পাত নিয়ে বাড়াবাড়ি করা উচিত নয়।

গ. উদ্দীপক ও ‘মানবধর্ম’ কবিতায় মানুষ জাতির স্বরূপ তথা প্রকৃত অবস্থা উন্মোচিত হয়েছে এবং প্রমাণিত হয়েছে মানবধর্ম হচ্ছে শ্রেষ্ঠ ধর্ম। পৃথিবীর সকল মানুষ এক জাতি। কোনো ভেদাভেদ নেই। ‘মানবধর্ম’ কবিতায় লালন শাহ্ মানুষের জাত-ধর্ম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁর মতে, মানুষ জন্ম ও মৃত্যুকালে যেহেতু জাত-ধর্মের চিহ্ন ধারণ করে না, তাই তাই জাত-পাত তথা ধর্মীয় ভেদাভেদ গ্রহণযোগ্য নয়। মানুষের সবচেয়ে বড় পরিচয় সে মানুষ। সব মানুষ সমান। তাঁর কাছে মানবধর্মই আসল ধর্ম বলে বিবেচিত।

উদ্দীপকেও মানবধর্মের কথা বলা হয়েছে। সকল মানুষকে এক জাতি হিসেবে উল্লেখ করে বজ্জাতিদের চরমভাবে ঘৃণা করা হয়েছে। কারণ, সকল মানুষ একই পৃথিবীর সন্তান। একই চন্দ্র-সুর্যের আলোতে সকলের বসবাস। বাইরের রঙে পার্থক্য থাকলেও ভেতরের রঙ এক ও অভিন্ন। ব্রাহ্মণ ও শূদ্রের মধ্যে যে পার্থক্য দেখা যায়, তা মানুষের সৃষ্টি। জাত নিয়ে জালিয়াত করে জুয়া খেলা করছে। শূদ্রকে ব্রাহ্মণ ছুঁলেই জাত যাবে এটা মানুষের সৃষ্টি। জাত ছেলের হাতের মোয়া নয়। ইচ্ছে করলেই জাতের পার্থক্য করা যাবে না। সকল মানুষের একটি ধর্ম তা হচ্ছে মানবধর্ম। মানবধর্ম শ্রেষ্ঠ ধর্ম আর মানুষ হচ্ছে সৃষ্টির সেরা জীব।

তাই বলা যায়, চেতনাগত ভাব প্রকাশে ‘মানবধর্ম’ কবিতা ও উদ্দীপকে সকল মানুষ একই এবং একরকম। ধর্মে কোন বিভেদ নেই। মানবধর্মই শ্রেষ্ঠ ধর্ম। ইচ্ছে করলেই ধর্মের পার্থক্য করা যাবে না।

ঘ. উদ্দীপকে মানুষের মধ্যে মানুষই জাতের পার্থক্য সৃষ্টি করছে তা ফুটে উঠেছে যা ‘মানবধর্ম’ কবিতার মূল প্রতিপাদ্য বিষয়।

‘মানবধর্ম’ কবিতায় কবি লালন শাহ্ ধর্ম বা সম্প্রদায়গত পরিচিতির চেয়ে মানুষকে মানুষ হিসেবেই বড় করে দেখেছেন। কবিতায় তিনি মানুষের জাত-পাতের বৈশিষ্ট্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি জাতের মধ্যে কোন পার্থক্য পান নি। তিনি বলেছেন, জন্ম বা মৃত্যুর সময় জাতের কোন চিহ্ন থাকে না, তেমনি জাতীয় জীবনে ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করা উচিত নয়। তাঁর মতে, সকলের এক পরিচয় আর তা হলো মানুষ। মানুষের ধর্ম হচ্ছে একটি যা মানবধর্ম।

উদ্দীপকেও একই বিষয়বস্তুর প্রতিফলন ঘটেছে। এখানেও কবি অসাম্প্রদায়িকতা ও সাম্যবাদী চেতনায় উদ্বুদ্ধ। সবার ওপরে মানুষের স্থান। মানবধর্ম হচ্ছে প্রধান। বজ্জাতিরা জাত নিয়ে জালিয়াত করে জুয়া খেলছে। পার্থক্য সৃষ্টি করছে জাত তথা ধর্মের। মানুষকে করছে বিভ্রান্ত। এজন্য কবি জাতের পার্থক্য করতে নিষেধ করে সকলের মধ্যে সম্প্রীতিবোধ কামনা করেছেন।

তাই বলা যায়, উদ্দীপকের শিক্ষাই যেন কবিতার মূল প্রতিপাদ্য বিষয়।

বহুনির্বাচনি প্রশ্ন:

১। লালন শাহ্ কত সালে জন্মগ্রহণ করেন?

ক. ১৭৬২ খ. ১৭৬৬ গ. ১৭৭২ ঘ. ১৭৭৪

২। ‘মানবধর্ম’ কবিতায় ‘জল’ শব্দটি কতবার ব্যবহৃত হয়েছে?

ক. দুই খ. তিন গ. চার ঘ. পাঁচ

৩। মানুষের জন্য ক্ষতিকর কোন বিষয়টি?

ক. ধর্মীয় গোঁড়ামি খ. ধর্ম

গ. প্রগতিশীলতা ঘ. সম্পদ

৪। ‘মানবধর্ম’ কবিতাটি আসলে লালন শাহ্ কর্তৃক রচিত কী?

ক. কবিতা খ. গদ্য

গ. পুথিসাহিত্য ঘ. গান

৫। ‘মানবধর্ম’ কবিতায় লালন শাহ্ জাতকে বুঝিয়েছেন?

ক. লাল খ. সাদা

গ. গেরুয়া ঘ. বর্ণহীন

৬। লালন শাহ্ একজন-

ক. মরমি কবি খ. গীতি কবি

গ.আধুনিক কবি ঘ. প্রকৃতির কবি

৭। লালনের অভিজ্ঞতা প্রকাশ পেয়েছে-

ক. গানের মাধ্যমে

খ. কবিতার মাধ্যমে

গ. দর্শনের মাধ্যমে

ঘ. প্রশ্ন করার মাধ্যমে

৮। মানুষকে অন্য জীব থেকে পার্থক্য করা যায় কীভাবে?

ক. সামাজিক পরিচয়ের মাধ্যমে

খ. মানুষ পরিচয়ের মাধ্যমে

গ. ধর্মীয় পরিচয়ের মাধ্যমে

ঘ. পেশাগত পরিচয়ের মাধ্যমে

৯। সিরাজ সাঁই একজন-

ক.সাধক খ. কবি

গ. গায়ক ঘ. সুরকার

উত্তর: ১. গ ২.খ ৩. ক ৪. ঘ ৫. ঘ ৬.ক ৭. গ ৮. খ ৯. ক।

 

লেখক : আজমাল হোসেন মামুন, সহকারী শিক্ষক, হরিমোহন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ।