বাইশে শ্রাবণ, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৭৭তম মহাপ্রয়াণ দিবস
- Aug 06, 2018
বাইশে শ্রাবণ, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৭৭তম মহাপ্রয়াণ দিবস। ১৩৪৮ বঙ্গাব্দের ২২ শ্রাবণ তিনি কলকাতায় পৈত্রিক বাসভবনে মৃত্যুবরণ করেন।
কলকাতার জোড়াসাঁকোর বিখ্যাত ঠাকুর পরিবারের দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও সারদাসুন্দরী দেবীর চতুর্দশ সন্তান রবীন্দ্রনাথ বাংলা সাহিত্যের আকাশে রবি হয়েই উদিত হয়েছিলেন। জন্ম ১২৬৮ বঙ্গাব্দের পঁচিশে বৈশাখ।
রবীন্দ্রনাথ কবি, উপন্যাসিক, নাট্যকার, সঙ্গীতজ্ঞ, প্রাবন্ধিক, দার্শনিক, ভাষাবিদ, চিত্রশিল্পী, গল্পকার- সবগুলো শৈল্পিক গুণের সমন্বিত এক বিস্ময়কর প্রতিভা। আট বছর বয়সে তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন। বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় তার সাহিত্যকর্ম অনুদিত হয়েছে। বিভিন্ন দেশের পাঠ্যসূচিতে তার লেখা সংযোজিত হয়েছে।
প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘কবিকাহিনী’ প্রকাশিত হয় ১৮৭৮ সালে। ১৯১০ সালে প্রকাশিত হয় তার ‘গীতাঞ্জলী’ কাব্যগ্রন্থ। এই কাব্যগ্রন্থের ইংরেজী অনুবাদের জন্য তিনি ১৯১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। ১৯০১ সালে পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে ব্রহ্মচর্যাশ্রম প্রতিষ্ঠা করে তিনি সেখানেই বসবাস করেন। ১৯২১ সালে গ্রামোন্নয়নের জন্য ‘শ্রীনিকেতন’ নামে একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯২৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘ বিশ্বভারতী’ প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৮৯১ সাল থেকে পিতার আদেশে কবি কুষ্টিয়ার শিলাইদহে, পাবনা, নাটোরে জমিদারী তদারকিতে ছিলেন। যা বাংলাদেশের এক আলোকোজ্জ্বল অধ্যায়। শিলাইদহে তিনি দীর্ঘদিন অতিবাহিত করেন। এখানে জমিদার বাড়িতে তিনি অসংখ্য কবিতা ও গান রচনা করেন। ১৯০১ সালে শিলাইদহ থেকে সপরিবারে কবি বোলপুরে শান্তিনিকেতনে চলে যান।
বাংলাদেশ ও ভারতের জাতীয় সংগীত নেওয়া হয়েছে এই প্রতিভাধর কবির রচনা থেকেই। তার লেখা ও সুর করা আড়াই হাজারের বেশি গান বাংলা সাহিত্যের অতুলনীয় সম্পদ।
রবীন্দ্রনাথ বোলপুরের শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শিক্ষাব্যবস্থায় নতুন ধারা প্রবর্তন করেন। কৃষির উন্নতির জন্য তার প্রতিষ্ঠিত শ্রীনিকেতনও এক যুগান্তকারী প্রতিষ্ঠান।
বাইশে শ্রাবণ তার পার্থিব জীবনের সমাপ্তি ঘটলেও বাংলা সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শ্রেষ্ঠ আসন অধিকার করে আছেন চিরদিনের জন্য। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৭৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সরকারি ও বেসরকারিভাবে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন নানা কর্মসূচি নিয়েছে।