মনোনয়ন না পাওয়ার শঙ্কায় থাকাদের আ.লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার সান্ত্বনা
- Nov 22, 2018
আলোকিত ডেস্ক: ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়ে তা থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কায় থাকাদের সান্ত্বনা দিয়েছেন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে দল ও জোট থেকে যারা মনোনয়ন পাবেন তাদের বিজয়ী করতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার নির্দেশও দেন তাদের।
বুধবার (২১ নভেম্বর) রাতে মনোনয়ন প্রত্যাশী দুই শতাধিক নেতাকর্মী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবনে গেলে তিনি সমবেতদের উদ্দেশে এসব কথা বলেন। সেখানে উপস্থিত থাকা একাধিক সূত্র থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, এদিন সন্ধ্যার সময় মনোনয়ন চেয়ে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কায় থাকা অনেকে গণভবনে যান। একে একে এ সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়ে যায়। মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) এর জন্ম দিন হওয়ায় এদিন ছিল ছুটির দিন। নেতাকর্মীরা তাদের প্রিয় ‘আপা’র কাছে নিজেদের বক্তব্য, অভিমান, অনুযোগ তুলে ধরার জন্য এ দিনটিকেই বেছে নেন। একসঙ্গে এত নেতাকর্মীর আগমনের খবর পেয়ে শেখ হাসিনাও নিচে নেমে আসেন। সমবেতরা জড়ো হন ব্যাংকুয়েট হলে। শেখ হাসিনা কার কী বক্তব্য আছে তা শুনতে চান। তখন একে একে অনেকেই তার নিজের বক্তব্য তুলে ধরেন।
প্রধানমন্ত্রীর সামনে বক্তব্য দেন ছাত্রলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং বরিশাল-২ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী শাহে আলম, ঢাকা-২ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী শাহীন আহমেদ (শাহীন চেয়ারম্যান), মুন্সীগঞ্জ-১ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা গোলাম সরওয়ার কবীর, বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক-জাহাঙ্গীর কবির, কুমিল্লা জেলা উত্তরের সাধারণ সম্পাদক-জাহাঙ্গীর আলম, নরসিংদীর শিবপুরের সাবেক এমপি জহিরুল হক ভূঞা মোহন, পাবনা-২ এর সংসদ সদস্য আজিজুল হক আরজু প্রমুখ।
শাহীন আহমেদ বুধবারের সন্ধ্যার সাক্ষাতের বিষয়ে বলেন, ‘আমি নির্বাচনে মনোনয়নের ক্ষেত্রে তৃণমূলের মতামতকে আমলে নেওয়ার প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণাকে সমর্থন করেছি। মনোনয়নের ক্ষেত্রে উপজেলা চেয়ারম্যান-মেয়রদের প্রার্থী না করার ঘোষণাকে পুনর্বিবেচনা করার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছি।’
সূত্র জানায়, এদিন শাহে আলম প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘বরিশালের বানারীপাড়ায় জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক কাঠামো নেই। আর যে ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেওয়ার কথা চলছে, তিনি পাশের থানা বাবুগঞ্জের মানুষ।’
ছাত্রলীগের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি গোলাম সরওয়ার কবীর প্রধানমন্ত্রীকে বলেন,‘ওই এলাকায় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অবস্থা ভালো। গণজোয়ার নৌকার পক্ষে। গত পাঁচ বছর ধরে তিনি ঘরে ঘরে গিয়ে কাজ করেছেন। নেতাকর্মীদের পাশে ছিলেন। ঢাকার প্রবেশ পথ হিসেবে ওই এলাকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া ওখানে অন্য দলের কোনও ব্যক্তি বা অন্য মার্কাকে মনোনয়ন দেওয়া হলে তিনি বিজয়ী হতে পারবেন না। জবাবে প্রধানমন্ত্রী বাস্তব অবস্থা বিবেচনায় নেওয়ার নিশ্চয়তা দেন।’
উল্লেখ্য, এ আসনে বিকল্পধারা বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাহী বি চৌধুরীকে মহাজোটের ব্যানারে মনোনয়ন দেওয়ার আলোচনা রয়েছে। বিকল্পধারা তথা যুক্তফ্রন্ট আওয়ামী লীগের নির্বাচনি জোট-মহাজোটের অংশীদার হয়ে নির্বাচন করার কথা রয়েছে। বিকল্পধারার নেতারা ঘোষণা দিয়েছেন তারা নিজের প্রতীক কুলা নিয়েই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
সূত্র জানায়, প্রত্যেকের বক্তব্য শেষে প্রধানমন্ত্রী কমবেশি কথা বলেন। আর সবার বক্তব্য শেষে তিনি সমবেতদের উদ্দেশে বলেন,‘এক একটি আসনে অনেক প্রার্থী। তারপর নির্বাচনি জোটও আছে। জরিপ অনুসারে সবখানে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনী জোটের কারণেও কিছু আসন ছাড়তে হবে। তাই কেউ মনোনয়ন না পেলে মন খারাপ না করে কাজ করতে হবে। দলের বা জোটের হোক, প্রার্থীকে জিতিয়ে আনতে হবে।’
সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন