• Thursday, November 21, 2024

মহিমান্বিত জননিরাপত্তা ও পুলিশী প্রতিশ্রুতি

  • Oct 13, 2024

Share With

ডিআইজি নজরুল ইসলাম, এনডিসি : 

“একটি সভ্য সমাজে সবচেয়ে বড় সামাজিক উপাদান হলো নিরাপত্তা”। কার্ল মার্কস (১৮৮৩) যখন এমন কথা বলছেন, তার বেশ আগেই এটাকে মহিমান্বিত করেছেন বৃটিশ জেনারেল, রাজনীতিবিদ অলিভার ক্রমওয়েল। বলেছেন, “জানিনা আমার মৃত্যুর পরে স্রষ্টার সামনে দাঁড়িয়ে কী বলবো! আমি কি বলতে পারবো যে ছোট্ট একটা মহল্লায় একজন কনষ্টেবল রাত জেগে মানুষকে যে শান্তি দেয়, আমি তা দিতে পেরেছি”! একই রকম সুরে কথা বলেছেন সমাজবিজ্ঞানী ম্যাক্স ওয়েবার। শান্তি ও নিরাপত্তা দেয়ার জন্য পুলিশের কাজকে বেশ মহিমান্বিত চোখে দেখেছেন তিনি। পুলিশকে বলেছেন ‘স্রষ্টার প্রতিনিধি’ ( representative of God)। জীবনের বিপদসংকূল বাঁকে মানুষ যখন নিজেকে অসহায় মনে করে, যখন স্রষ্টাকে স্মরণ করে, তখন তার সামনে যে এসে দাঁড়ায়, অপশক্তির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে, মানুষ তাকে স্রষ্টার প্রতিনিধিই মনে করে।

সমাজবিজ্ঞানীদের এই উপলব্ধিগুলো মিলে যায় ধর্মতত্ত্বের সাথে। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ প্রকাশ করেছেন নিজের বৈশিষ্ট্য। ‘সালামুল মু’মিনুল মুহাইমিনুল’ (শান্তিদাতা, নিরাপত্তা দাতা, রক্ষক)। মহান স্রষ্টা যে মানুষকে নিরাপত্তা দেন, সেই কথা লেখা আছে বাইবেল, তোরাহ এবং বেদ-পুরাণেও। হিন্দু ধর্মগ্রন্থগুলোতে ‘ভগবান বিষ্ণুকে’ রক্ষাকর্তা হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। বৌদ্ধ, জৈন সমস্ত দর্শনে শান্তি, নিরপত্তার জন্য তাদের ‘ভগবান’ ( বুদ্ধ/ তীর্থংকর) গণের আদর্শ অনুশীলনের ওপর বেশ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। স্রষ্টার এবং ধর্মগুরুগণের মহান বৈশিষ্ট্যসমূহ অনুশীলনের ওপরও গুরুত্ব দেয়া হয়েছে সকল ধর্মতত্ত্বে। মানুষ সৃষ্টিগতভাবেই অন্যান্য প্রাণীকূল থেকে পৃথক। ঐশি ধর্মগ্রন্থ অনুসারে মহান আল্লাহ এই পৃথিবীতে তাঁর প্রতিনিধি সৃষ্টির ঘোষণা দেন। সেই প্রতিনিধিকে বিশেষ কিছু গুন দিয়েছেন; সৃষ্টিগতভাবেই কিছু দূর্বলতাও রয়েছে মানুষের। সেই দূর্বলতা কাটিয়ে সঠিক পথে জীবন যাপনের নির্দেশ দিয়েছেন স্রষ্টা। সেই জন্য দিয়েছেন বিশেষ দায়িত্ব্ও। মানুষের অনেক দায়িত্বের মধ্যে আল্লাহ বিশেষভাবে মহিমান্বিত করেছেন- মানুষকে নিরাপত্তা দেয়ার বিষয়টি। বলেছেন, -“মানুষকে হত্যা করা বা পৃথিবীতে নৈরাজ্য সৃষ্টি ছাড়া যে ব্যক্তি কাউকে হত্যা করলো, সে যেন সমগ্র মানব জাতিকে হত্যা করলো। আর যে কারও প্রাণ বাঁচালো, সে যেন সমগ্র মানবজাতিকে বাঁচালো”। একেকজন মানুষের নিরাপত্তার দায়িত্বরত পুলিশ যেন মহান আল্লাহ প্রদত্ত সেই নির্দেশকেই প্রতিপালন করে। পবিত্র কোরআনে ১০৭টি আয়াত রয়েছে, যাতে মানুষের জন্য শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার কাজকে মহিমান্বিত করা হয়েছে। সেই মহিমা প্রস্ফুটিত হয়েছে হাদিসেও। ইবন আব্বাস(রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুল(সাঃ) বলেছেন, “দুটো চোখকে কখনই দোজখের আগুন স্পর্শ করবে না। যে চোখ আল্লাহর ভয়ে কাঁদে, আর যে চোখ আল্লাহর পথে পাহারায় বিনিদ্র রাত যাপন করে”। রাত জেগে পথে ঘাটে টহল দেয়া, মানুষের নিরাপদ চলাফেরা, শান্তির ঘুম নিশ্চিত করা, এমনকি অন্যকে বাঁচাতে নিজের জীবনের ঝুকি নেয়ার আবহমান পুলিশী দায়িত্ব- পার্থিব অনেক দায়িত্বের সাথে মেলানো যায় না। পুলিশ আরও অনেক দায়িত্ব পালন করে। তবে ধর্মতত্ত্ব এবং সমাবিজ্ঞানের দৃষ্টিতে অন্তত একটি দায়িত্ব অতীব মহত্বপূর্ণ। মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বারবার সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার কথা বলেছেন। একজন সৎ এবং নীতিবান পুলিশ প্রচলিত আইন প্রয়োগের মাধ্যমে নীরবে করে যায় সেই কাজ। যেমন, কারও জায়গা- জমি কেউ জবর দখল করছে, রাস্তা বা বাসা থেকে কোন সম্পদ জোর করে কেড়ে নিয়ে যাচ্ছে, অথবা কাউকে খুনের ষড়যন্ত্র করছে- এমন পরিস্থিতিতে পুলিশ যদি তাৎক্ষনিকভাবে অন্যায়কারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়, নিবৃত করে, তাহলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সেখানে ন্যায় এবং শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়। এছাড়াও অপরাধ উদঘাটনে সত্য স্বাক্ষ্য সংগ্রহ করা ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার একটি বড় অনুসঙ্গ। যেখানে আল্লাহ নির্দেশ দিয়েছেনঃ “হে ঈমানদারগন! ন্যায়ের প্রতি সুপ্রতিষ্ঠিত এবং আল্লাহর পথে সত্য স্বাক্ষ্যদাতা হও যদিও তা তোমাদের নিজেদের এবং মাতা-পিতা ও আত্নীয় স্বজনের বিরুদ্ধেও হয়, কেউ ধনী হোক কিংবা গরীব হোক, আল্লাহ উভয়েরই ঘনিষ্ঠতর। অতএব প্রবৃত্তির অনুসরণ করো না যাতে তোমরা ন্যায়বিচার করতে পারো এবং যদি তোমরা তথ্যবিকৃত করো কিংবা সত্যকে এড়িয়ে যাও, তবে নিশ্চয়ই তোমরা যা করছো, আল্লাহ সে বিষয়ে সম্পর্ণ অবহিত” (সুরা নিসা-১৩৫)। সত্য স্বাক্ষ্য সংগ্রহ, আদালতে উপস্থাপন, আসামীকে আদালতে উপস্থাপন এবং দোষী ব্যক্তিকে কারাগারে পাঠিয়ে পুলিশ সমাজে ন্যয়বিচার প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করে। ধর্মতত্ত্বের দিক থেকে পুলিশের এই ভূমিকাও অতি গুরুত্বপূর্ণ। বস্তুতঃ নানা প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকার জন্য মানুষ সংগ্রাম করেছে। সুপ্রাচীনকাল থেকেই এই জননিরাপত্তা, ন্যায় ও শান্তিপ্রতিষ্ঠা, মানুষকে সুরক্ষা দেয়ার দায়িত্ব পালন করছে একশ্রেণীর মানুষই।

যখন রাষ্ট্র ছিল না, ‘পুলিশ’ ছিল না- তখনও পৃথিবীতে অপ্রাতিষ্ঠানিক, অবিশেষায়িত শান্তিরক্ষী, নিরাপত্তাকর্মী ছিল। পাড়ায় মহল্লায় অশান্তি, অনাচার, অনিরাপত্তা দূর করার দায়িত্ব পালন করেছেন একদল মানুষ। বৃহৎ বঙ্গে মন্ডল(মোডল), মাঝি, মাহাতো, পন্চায়েত, বা-ই-শি, পারগানাইত, কূলকার, গণ প্রভৃতি উপাধির ব্যক্তিবর্গ সেই দায়িত্ব পালন করেছেন। ওই সব মানুষের প্রধান দায়িত্ব ছিল সমাজের সব মানুষকে নিরাপত্তা দেয়া। রাষ্ট্র ব্যবস্থা চালু হবার পর সেটার ব্যতিক্রম হয়নি। বৃহৎ বঙ্গে ‘অসুর’দের গুরু হিসেবে পরিচিত ছিলেন শুক্রাচার্য। তার লেখা আইন ‘শুক্রনীতি’তে উল্লেখ রয়েছে- সেই যুগে রাজার মোট আটটি দায়িত্ব ছিল। প্রথম এবং প্রধান দায়িত্ব ছিল জনগণকে নিরাপত্তা দেয়া। সেটার ব্যতিক্রম হয়নি বৈদিক দর্শনেও। ঋগবেদে বলা হয়েছে – ‘গোপা জনস্য’। অর্থাৎ রাজা হলেন রক্ষক। রাজার প্রধান কাজ হলো জনগণের নিরাপত্তা দেয়া। মনুসংহিতায় বলা হয়েছে, যে রাজা, প্রজার নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হন, তিনি স্খলিত হন। সেই জন্য সেই যুগেও গুরুত্ব পেয়েছিল জননিরাপত্তা। ওই গুরুদায়িত্ব পালন করতেন রাজন্য বা রাজপরিবারের সদস্যগণ। সেটা গুরুত্ব পেয়েছে মহাভারতেও। উল্লেখ রয়েছে, ব্রাক্ষণের গরু চুরির সংবাদ পেয়ে ছুটে যাচ্ছেন ভীম। বৃহৎ বঙ্গে জৈন শাসনামলে অভিন্ন ছিল রাজা এবং আইন প্রয়োগকারির পদবী। উভয়েরই পদবী ছিল “যক্ষ” । জননিরাপত্তা প্রদানকারিরা যে রাষ্ট্রের এবং সরকারের দৃশ্যমান প্রতিনিধি হিসেবে সম্মানিত- সেটাই ফুটে ওঠে সেই অভিন্ন পদবীতে। ইসলামী খেলাফতেও জননিরাপত্তা বিশেষভাবে মহিমান্বিত দায়িত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। হয়রত মুহাম্মদ (সাঃ) এর মদিনা রাষ্ট্রে মানুষের নৈতিক চরিত্র এত উন্নত হয়েছিল যে, পুলিশের প্রয়োজনীয়তা ছিল না বললেই চলে। হযরত ওমর (রাঃ) রাজ্যের বাসিন্দাদের নিরাপত্তা দায়িত্ব নিজেই তদারকী করতেন। হঠাৎ বের হয়ে যেতেন নৈশ টহলে। হযরত আলীর (রাঃ) সময় একই দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি হয়। আর খলিফা হারুন অর রশীদের প্রজাপালনের, জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য নৈশ ভ্রমন তো বিস্ময়কর! ইতিহাসের বিশেষ অধ্যায় জুড়ে রয়েছে জননিরাপত্তায় তাঁর নৈশ ভ্রমন। এমনকি মুঘল আমলেও জননিরাপত্তার গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। শহুরে জননিরাপত্তার প্রধান চরিত্র কোতয়াল-এর নামে আজও টিকে আছে বাংলাদেশের ১২টি স্থান। যেগুলোকে বলা হয় কোতয়ালী । আর মফস্বলে অসংখ্য স্থান টিকে আছে কসবা বা কুসবা নামে। সেগুলো ছিল জেলা পর্যায়ের পুলিশ স্থাপনা। যুগে যুগেই তারা অনিরাপদ- ভয়ার্ত মানুষের মনে নিরাপত্তাবোধ জাগিয়েছেন। অশ্রুসজল চোখের পাশে চওড়া হাসি ফুটিয়ে তুলেছেন। এমন উপভোগ্য দৃশ্য আর কিছুই হয় না। আজ এক যুগসন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছি আমরা। বাংলাদেশের অনেক কিছুই সংস্কার করা হচ্ছে। সংস্কার প্রক্রিয়া চলছে পুলিশেরও। একটা বড় ধরনের বিচ্যুতি এবং বিপর্যয় থেকে ঘুরে দাঁড়াবার প্রচেষ্টা চলমান। এই মূহু্র্তে প্রয়োজন পুলিশের সেই মহান অঙ্গীকার, শিক্ষা এবং দীক্ষা স্মরণ করা। মানুষের নিরাপত্তা ক্ষুন্ন হচ্ছে, জনশৃংখলা ব্যাহত হচ্ছে; অথচ কিছু পুলিশ অফিসে বসে, পথে দাঁড়িয়ে নির্বিকার হয়ে দেখছে। এটা শুধু অগ্রহনযোগ্য নয়, অন্যায়। ওইসব পুলিশ সদস্যকে উপলব্ধি করতে হবে, তার দায়িত্বটা শুধু নিছক চাকরী নয়; এর সাথে জড়িয়ে আছে মানুষকে নিরাপত্তা দেয়ার মহান ও পবিত্র অঙ্গীকার। মহানবী( সাঃ) এর একটি বাণী পুলিশের জন্য অবিস্মরণীয়। “তোমাদের মধ্যে যে অন্যায় দেখবে, সে যেন তা তার হাত দিয়ে বাধা দেয়। আর যদি হাত দিয়ে বাধা দিতে না পারে, তবে যেন মুখ দিয়ে বাধা দেয়। আর যদি মুখ দিয়ে বাধা দিতে না পারে, তবে যেন অন্তর দিয়ে বাধা দেয়; আর এটি হলো দূর্বল ঈমানের পরিচয়।” আইন প্রয়োগে রাষ্ট্র কর্তৃক দায়িত্বপ্রাপ্ত, অস্ত্রধারি পুলিশের জন্য অন্যায় অপরাধকারিকে বাধা দেয়া, প্রতিহত করা, আইনগত ব্যবস্থা নেয়া অবশ্য পালনীয় দায়িত্ব ও কর্তব্য। ধর্মীয় দৃষ্টিতে এই দায়িত্ব ওয়াজিব নয়, ফরজে আইন। রাষ্ট্রের দৃশ্যমান প্রতিনিধি হিসেবেও জননিরাপত্তা বিধান করা, সমাজে শৃংখলা কক্ষা করা পুলিশের প্রথম ও প্রধান কাজ। পবিত্র গ্রন্থসমূহ এবং সংবিধানকে সামনে রেখে মানুষের নিরপত্তা প্রদানের শপথ নিয়ে চাকরীতে প্রবেশ করেছে প্রত্যেকটি পুলিশ সদস্য। সেই পবিত্র অঙ্গীকার ভুলে গেলে সমাজের মানুষের কাছে, রাষ্ট্রের কাছে, মহান স্রষ্টার কাছে জবাবদিহীতা করতে হবে, নিশ্চয়ই।

সুদীর্ঘকাল ধরে সমাজতত্ত্ব, ধর্মতত্ত্ব, রাজ-প্রতিশ্রুতি, কিংবা আইনগতভাবে জননিরাপত্তার যে অন্তর্ণিহিত মহৎ আদর্শ লালিত হয়েছে, আইন প্রয়োগকারিদের মধ্যে নৈতিক শিক্ষা প্রচলিত ছিল, তার ব্যাপক ছন্দপতন ঘটেছে বৃটিশ উপনিবেশিক পুলিশী ব্যবস্থায়। বৃটিশ ঔপনিবেশিক আইনে, প্রশিক্ষণে, আইন প্রয়োগকারিদের মননে, আচরণে তাদের কাজকে শক্তিপ্রয়োগকারি, ক্ষমতাসম্পন্ন হিসেবে দেখানো হয়েছে। প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলোতে তা-ই শেখানো হয়েছে। সমাজবিজ্ঞানীগণ জননিরাপত্তাকে যে মহিমান্বিত দায়িত্ব হিসেবে দেখিয়েছেন, ধর্মতত্ত্বে যে পবিত্র স্বর্গীয় দায়িত্ব হিসেবে দেখানো হয়েছে, রাজকর্মে যে সর্বোচ্চ অঙ্গীকার হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে- তার কোনটারই প্রতিফলন ঘটেনি এই আইনে। উল্টো শোষন, নিপীড়নের ‘ক্ষমতা’ এবং শক্তিপ্রয়োগের দর্শন গেঁথে গেছে পুলিশের মননে, আচরণে। শতাব্দীর পর শতাব্দী এদেশের পুলিশ আটকে আছে ওই প্রত্যয় ও প্রতিশ্রুতিতে। আলবার্ট বান্দুরাসহ অনেকের সামাজিক শিক্ষণ তত্ত্ব এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। তারা বলেছেন, মানুষ তার পারিপার্শিকতায় যা দেখে, যা শেখে; চেতন এবং অবচেতন মনে তা গেঁথে নেয়। প্রায়োগিক ক্ষেত্রে তারই পুনরাবৃত্তি ঘটায়। গভীরভাবে এটা উপলব্ধির দাবীদার যে পুলিশ শুধুই শক্তিপ্রয়োগকারি, আইনপ্রয়োগকারি কোন যন্ত্র নয়। তাদের ভেতরে মহত্ত্বর সুকুমার সত্ত্বা বিকাশের প্রয়োজন আছে। যে নৈতিক শিক্ষা আইন ও শক্তি প্রয়োগের সময় তাদেরকে সমাজসেবা, অপরাধ প্রতিরোধের বা দমনের গুরুত্ব, মানুষের মৌলিক ও মানবাধিকার নিশ্চিত করা, আসামী গ্রেফতার, স্বাক্ষ্য সংগ্রহ ও উপস্থাপন শুধুই আইনী দায়িত্ব নয়; এই দায়িত্ব স্বর্গীয়। সেই দায়িত্ববোধ স্বর্গীয় দূত হিসেবে, স্রষ্টার প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতে তাদেরকে অনুপ্রেরণা জোগাবে- সেই শিক্ষণ ও প্রশিক্ষণ অতীব জরুরী।

লেখকঃ গবেষক, ডিআইজি, এপিবিএন, পার্বত্য জেলা সমূহের কার্যালয়, রাঙ্গামাটি।