যোগাযোগ খাতে ব্যাপক সাফল্য
- Nov 02, 2018
মহাজোট সরকারের তিন বছর পার হওয়ার পর ২০১১ সালের নভেম্বরে ‘সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়’ (তৎকালীন যোগাযোগ মন্ত্রণালয়) এর দায়িত্ব পান ওবায়দুল কাদের। এর পর ঢাকা-চট্টগ্রাম চার লেনবহুল প্রতীক্ষিত ঢাকা-চট্টগ্রাম চার লেন প্রকল্পের কাজ প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। প্রত্যাশার চেয়ে সময় বেশি লাগলেও অবশেষে এ প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছে দেশবাসী। ঢাকা-চট্টগ্রাম চার লেন প্রকল্পের কাজ ২০১০ সালের ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়। কয়েক দফা সময় বাড়ানোর পর এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পূর্ণ কাজ সমাপ্ত হওয়ার কথা। গত জানুয়ারি পর্যন্ত এ প্রকল্পের ১৯২ কিলোমিটার রাস্তার কাজ শেষ হয়েছে। বর্তমানে ফিনিসিংয়ের কাজ চলছে। সড়কের দু’দিক ফিনিসিংয়ের কাজের বাকী ২৭৪ কিলোমিটার আগামী চলতি মাসের আগেই শেষ হবে। এছাড়া মহাসড়কে ১৪টি বাইপাস, ২৩টি সেতু ও ২৩০টি কালভার্ট নির্মাণের কাজও শেষ হয়েছে বলে তিনি জানান। তবে কিছু কাজ এখনো বাকী যা এ বছরের মধ্যে শেষ হতে পারে। এর মধ্যে তিনটি রেলওয়ে ওভারপাসের মধ্যে কোনটির কাজ এখনো শেষ হয়নি।
ফেনীর ওভারপাসের সংযোগ সড়কের কাজই শুরু হয়নি। সব মিলিয়ে রেলওয়ে ওভারপাসের কাজ ৪০ শতাংশ শেষ হয়েছে। ঢাকা মেট্রো রেল ঢাকা মহানগরীতে কার্যকরী ও দক্ষ পরিবহন ব্যবস্থা চালু করা, সর্বসাধারণের জন্য গণপরিবহন সুবিধাদির ব্যবস্থা করা এবং নিরাপদ ও পরিবেশ বান্ধব পরিবহন ব্যবস্থা চালু করার লক্ষ্যে মেট্রোরেল চালু করার জন্য ২০০৮ সাল থেকে প্রাথমিক কাজ শুরু করে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। সম্ভাব্যতা যাচাই আর নকশা অনুমোদনসহ নানা জটিলতায় গুরুত্বপূর্ণ এ প্রকল্পটি শুরুই করতে দেরি হয়। বাংলাদেশ সরকার ও জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)’র অর্থায়নে প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে মেট্রোরেলের কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ১৯ দশমিক ৭৯ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ‘ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট’ (ডিএমআরটিডিপি) বাস্তবায়ন করছে ‘ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ’ (ডিটিসিএ)। মেট্রোরেল পরিচালনার জন্য ‘ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) নামে একটি কোম্পানিও গঠন করেছে সরকার। ঘন্টায় ৬০ হাজার যাত্রী বহন সক্ষম এ রেল ২০১৯ সালে উদ্বোধনের লক্ষ্যে কাজ করছে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।
২০১৩ সালের ৩১ অক্টোবর প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মেট্রো রেলের প্রকল্প পরিচালক মোফাজ্জেল হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, মোট আটটি প্যাকেজে বাস্তবায়ন করা হবে মেট্রো রেল। এ বছরের জুলাই পর্যন্ত বিভিন্ন দরপত্র প্রক্রিয়া চলবে। অক্টোবরে চুক্তি সই হতে পারে। সব ঠিক থাকলে প্রথম পর্বের নির্মাণ কাজ ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে শেষ হবে। ২০২৪ সালে শেষ হবে সম্পূর্ণ কাজ। ঢাকা উড়াল সড়ক:রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকা থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত ১৯ কিলোমিটার উড়াল সড়ক (এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে) নির্মাণ কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে। গত বছরের জুলাই মাসে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হচ্ছে প্রায় সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকা। আগামী ২০১৮ সালের মধ্যে এ সড়কটি ব্যবহার করা যাবে। এতে যানজট থেকে রেহাই পাবেন যাত্রীরা। দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপের কাজ চলমান আছে, যা আগামী ১৬ জুন ২০১৬ সালের মধ্য শেষ হবে। অতীতে সড়কের কাজে কিছুটা বিলম্ব হলেও এখন দ্রুতগতিতে কাজ চলবে বলে জানান মন্ত্রী। কাজটি নির্ধারিত সময়ে শেষ হওয়ার ব্যাপারেও আশা প্রকাশ করেন তিনি। ঢাকা উড়াল সড়কের দৈর্ঘ্য হবে হযরত শাহজালাল (র) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত মোট ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। এটি বিমানবন্দর-কুড়িল-বনানী-মহাখালী-তেজগাঁও-মগবাজার-কমলাপুর-সায়েদাবাদ-যাত্রাবাড়ী হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালী গিয়ে শেষ হবে। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের বাস্তবায়নে এ প্রকল্পে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে রয়েছে ইতালিয়ান থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেড।
কর্ণফুলী টানেল: চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর নীচ দিয়ে সাড়ে ৩ কিলোমিটার টানেল নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পটি চায়না এক্সিম ব্যাংকের ঋণের টাকায় বাস্তবায়ন করা হবে। গত ৩০ জুন চায়না কমিউনিকেশন কনস্ট্রাকশন (সিসিসিসি)র সাথে নির্মাণ চুক্তি সম্পাদন করেছে বাংলাদেশ সেতু বিভাগ। কর্ণফুলী টানেল নির্মাণের জন্য সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে কাজ হয় ২০১৩ সালে। চায়না কোম্পানি সিসিসিসি ও হংকংয়ের ওভিই অরূপ অ্যান্ড পার্টনারস সম্ভাব্যতা যাচাই করে। সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয় সেতু কর্তৃপক্ষ। কর্ণফুলী নদীর মোহনায় কাফকো-পতেঙ্গা পয়েন্টে টানেলটি নির্মাণের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়। এটি নদীর পশ্চিম পাশে সি বিচের নেভাল গেট পয়েন্ট থেকে নদীর ১শ ৫০ ফুট নিচ দিয়ে অন্য পাশে গিয়ে ওঠবে। দক্ষিণ পাড় থেকে সংযোগ সড়ক দিয়ে টানেলটি বাঁশখালী সড়কে গিয়ে মিলবে। টানেলটির দৈর্ঘ্য হবে সাড়ে তিন কিলোমিটার। এর পূর্ব প্রান্তে প্রায় ৫ কিলোমিটার ও পশ্চিম প্রান্তে ৭শ ৪০ মিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হবে।মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার:দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর বহু আলোচিত মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভারের একটি অংশ গত ৩০ জুন উদ্বোধন করা হয়েছে। ওই দিন সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের দীর্ঘতম এই ফ্লাইওভারের রমনা থেকে তেজগাঁও সাতরাস্তা পর্যন্ত দুই কিলোমিটার অংশের উদ্বোধন করেন।
ফ্লাইওভার নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) এলজিআরডি’র প্রকৌশলী নাজমুল আলম বলেন, উদ্বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রী চলে যাওয়ার পর ফ্লাইওভারের প্রথম অংশটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। বাকি কাজের মধ্যে হাতিরঝিল থেকে এফডিসি অংশের র্যাম্পটির নির্মাণ কাজ দ্রুতই শেষ হবে জানান এই ফ্লাইওভারের প্রকল্প পরিচালক। পুরো প্রকল্পের ৭০ ভাগের মতো কাজ শেষ হয়েছে জানিয়ে প্রকৌশলী নাজমুল বলেন, তিন ধাপে কাজ শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে। বাংলামোটর থেকে মৌচাক অংশ আগামী জুনে খুলে দেওয়া হবে। আর বাকি অংশটুকু ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারির মধ্যে খুলে দেওয়ার জন্য সব ধরনের চেষ্টা করা হচ্ছে।জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ চার লেন:জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ৮৭ কিলোমিটার যাতায়াত করতে এখন লাগে মাত্র এক ঘণ্টা। ব্যস্ততম এ মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীত করায় এই সুবিধা ভোগ করছেন বৃহত্তর ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, গাজীপুরসহ অত্র অঞ্চলের লাখো মানুষ। এখন শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষা। জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ চার লেন প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। আগামী মাসেই এ প্রকল্প উদ্বোধন করা হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গত ১৭ মার্চ ময়মনসিংহের ভালুকায় জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ চারলেন সড়কের ১১ কিলোমিটার অসমাপ্ত কাজ পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এ ঘোষণা দেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চার লেনের এই মহাসড়কটি উদ্বোধন করবেন বলে জানিয়েছে সড়ক ও জনপথ (সওজ)। ২০১০ সালের জুলাইয়ে জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ চার লেন প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। বর্তমানে এ প্রকল্পের ৯০ থেকে ৯৫ ভাগই কাজ শেষ। ইতিমধ্যে এই মহাসড়ক দিয়ে চলাচলকারী হাজার হাজার সাধারণ মানুষের যাতায়াতে আমূল পরিবর্তন এসেছে।রংপুর মহাসড়ক চার লেন:ভারত, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে উপ-আঞ্চলিক সড়ক সংযোগ স্থাপন ও উত্তরাঞ্চলে সড়ক দুর্ঘটনা এড়াতে সরকার কার্যকর পরিবহন ব্যবস্থা নিশ্চিত করার উদ্যোগ নিয়েছে।
এরই অংশ বিশেষ ১৯০ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘এলেঙ্গা-হাটিকুমরুল-রংপুর মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ’ প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এটি করা হলে যানবাহনের গতিসীমা ঘণ্টায় ৬০ থেকে বেড়ে ৮০ কিলোমিটার হবে। দুই পাশে থাকবে কম গতির যানবাহনের জন্য পৃথক লেন। এর নির্মাণ কাজ ২০২০ সালে শেষ হবে। এ প্রকল্পে প্রায় ১৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে। অর্থায়ন করছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। টাঙ্গাইল-সিরাজগঞ্জ-বগুড়া-গাইবান্ধা-রংপুর জেলার ১৪টি উপজেলার ওপর দিয়ে দুই লেন বিশিষ্ট এলেঙ্গা-হাটিকামরুল-রংপর জাতীয় মহসড়কের সেবার মান খুবই নিম্নমানের। এর নির্মাণকাল ধরা হয়েছে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। এতে ব্যয় হবে ১২ হাজার ৭৪১ কোটি টাকা। এর মধ্যে এডিবি ঋণ দেবে ১০ হাজার ১৩৩ কোটি টাকা।ঢাকা ইস্টার্ন বাইপাস:ঢাকা ইস্টার্ন বাইপাস ও মেট্রোরেল রুট-১ নির্মাণে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের লক্ষ্যে কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে জাপানের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা জাইকা।
গত বছরের সকালে জাইকা’র সদর দপ্তরে সংস্থার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট দোমিচি হিদেকির নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধিদলের সঙ্গে জাপান সফররত সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধিদলের বৈঠকে এ বিষয়ে দু’পক্ষ সম্মত হয়। বৈঠকে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ঢাকা ইস্টার্ন বাইপাস ও মেট্রোরেল রুট-১ নির্মাণে অর্থায়নের প্রস্তাব ছাড়াও মেট্রোরেল রুট-৫, যমুনা নদীর তলদেশ দিয়ে টানেল নির্মাণ, পদ্মা সেতুর সঙ্গে সংযুক্ত চরজানাজত সংযোগ, ভাঙ্গা-ভাটিয়াপাড়া-কালনা সংযোগ সড়ক, পাঁচগাছি সেতু, সোনাপুর-সোনাগাজী-জোরারগাছ সড়ক নির্মাণে জাইকা’র মাধ্যমে জাপান সরকারের অর্থায়নের প্রস্তাব করেন।ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক:ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণে কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ২২৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়কের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১২ হাজার ৬৬৬ কোটি টাকা। সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদফতর সুত্রমতে, ঢাকার কাঁচপুর থেকে সিলেট পর্যন্ত সড়কটি চার লেনে উন্নীত করতে চায় সরকার। ইতিমধ্যে সম্ভাব্যতা যাচাই ও বিস্তারিত নকশা প্রস্তুত করা হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় মূল সড়কের পাশাপাশি ধীরগতির যানবাহনের জন্য দুই পাশে পৃথক লেন নির্মাণ করা হবে।
এছাড়া ছোট আকারের ৬০টি সেতু, চারটি ফ্লাইওভার ও ২৭টি বক্স কালভার্ট নির্মাণ করা হবে। চলতি বছর শুরু করে ২০১৯ সালে প্রকল্পটি শেষ করার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে সংশ্লিষ্টরা।এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কাছে সহায়তা চাওয়া হয়েছে। সংস্থাটি ১ বিলিয়ন ডলার বা ৭ হাজার ৯০০ কোটি টাকা ঋণ দেয়ার আশ্বাসও দিয়েছে বলে সুত্র জানানয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে আগ্রহ দেখিয়েছে চীন। দেশটির ঋণে চায়না কমিউনিকেশন কনস্ট্রাকশন কোম্পানি (সিসিসিসি) সড়কটি চার লেন করতে আগ্রহী।বিমানবন্দরে টানেল ও ৫ম মেট্রোরেল:ঢাকা মহানগরীর পূর্ব-পশ্চিমে সংযোগ বাড়াতে চূড়ান্ত করা হয়েছে মেট্রোরেল-৫ এর রুট। গাবতলী থেকে শুরু হয়ে মেট্রোরেল-৫ টেকনিক্যাল মোড়-মিরপুর-১, মিরপুর-১০, মিরপুর-১৪, ক্যান্টনমেন্ট- কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ-গুলশান-মাদানী এভিনিউ হয়ে ভাটারা গিয়ে শেষ হবে। এরমধ্যে মিরপুর-১৪ থেকে ক্যান্টনমেন্ট এর নিচ দিয়ে কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ-গুলশান-মাদানী এভিনিউ হয়ে ভাটারা পর্যন্ত ৬ কিমি হবে আন্ডারগ্রাউন্ড।এয়ারপোর্ট হতে কুড়িল ফ্লাইওভার-আমেরিকান দূতাবাস-রামপুরা-মালিবাগ ক্রসিং-মৌচাক-কমলাপুর স্টেশন পর্যন্ত মেট্রোরেল-১ এর রুট চূড়ান্ত হয়েছে। এরমধ্যে মালিবাগ ক্রসিং থেকে মৌচাক হয়ে কমলাপুর স্টেশন পর্যন্ত ৬ কিমি হবে আন্ডারগ্রাউন্ড।
গত নভেম্বরে ঢাকা ট্রান্সপোর্ট কো-অর্ডিনেশন অথরিটি (ডিটিসিএ) এর সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়।দ্বিতীয় কাঁচপুর মেঘনা গোমতী সেতু:ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দ্বিতীয় কাঁচপুর, মেঘনা ও গোমতী সেতু নির্মাণে গত বছরের জানুয়ারি মাসে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করে সরকার। প্রায় সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে এ তিন সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। জাপানের আন্তর্জাতিক সহযোগী সংস্থা জাইকার অর্থায়নে তিনটি সেতু নির্মাণে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া হয়। ইতিমধ্যে সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে মন্ত্রী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এ প্রল্পের মাধ্যমে প্রায় ৪০০ মিটার দীর্ঘ দ্বিতীয় কাঁচপুর সেতুর সঙ্গে ৭০০ মিটার দীর্ঘ ৮ লেনবিশিষ্ট এ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণ ও পুরনো সেতু সংস্কার করা হবে। কাঁচপুর সেতুর প্রান্তে একটি ফ্লাইওভার ও ইন্টারসেকশন নির্মাণ করা হবে।
চার লেনবিশিষ্ট দ্বিতীয় মেঘনা সেতুটি হবে প্রায় ৯৩০ মিটার দীর্ঘ, এর সঙ্গে ৬ লেনবিশিষ্ট ৮৭০ মিটার এ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণ ও পুরনো মেঘনা সেতু সংস্কার করা হবে।’২০০৯ সালের শুরুতে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় এসেই যোগাযোগ খাতে উন্নয়নের জন্য বহুমুখী পদক্ষেপ শুরু করেন। মহাজোট সরকারের ৫ বছর ও বর্তমান সরকারের ২ বছরে সড়কপথের মতো রেলপথেও ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। রেলের উন্নয়নে বিগত মহাজোট সরকারের সময়ই পৃথক রেলপথ মন্ত্রণালয় গঠন করা হয়। ইতিমধ্যে নতুন নতুন রেলপথ নির্মাণ করা হয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথ লাকসাম থেকে চিনকীর আস্তানা পর্যন্ত ডাবল লাইনে উন্নীত করা হয়েছে। টঙ্গী থেকে ভৈরব পর্যন্ত রেলপথকে ডাবল লাইনে উন্নয়ন করার কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। ভৈরবে মেঘনা নদীর ওপর নির্মাণ করা হচ্ছে দ্বিতীয় রেল সেতু। এ ছাড়া রাজধানী ঢাকা থেকে পর্যটন নগরী কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণের জন্য ইতিমধ্যে প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে।