• Thursday, November 21, 2024

রাজশাহী ওয়াসার ভূ-উপস্থিতি পানি শোধনাগারসহ ১৭ প্রকল্প অনুমোদন

  • Oct 12, 2018

Share With

রাজশাহী ওয়াসার ভূ-উপরিস্থিত পানি শোধনাগারসহ ১৭ প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪ হাজার ২০০ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ১১ হাজার ১৯৩ কোটি ৬৯ লাখ টাকা, বাস্তবায়নকারী সংস্থার নিজস্ব তহবিলের ২ হাজার ৮১১ কোটি ৬২ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে পাওয়া যাবে ১৯৫ কোটি ২৮ লাখ টাকা।

বৃস্পতিবার রাজধানীর শেরেবাংলানগর এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক বৈঠকে এসব প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়।
বৈঠকশেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
তিনি বলেন, বর্তমানে রাজশাহী মহানগরের পানি সরবরাহের কাভারেজ ৭১ শতাংশ এবং রাজশাহী ওয়াসা মোট পানি উৎপাদনে ৯৬ শতাংশ ভূ-গর্ভস্থ পানি ব্যবহার করে। ভূ-গর্ভস্থ উৎস্য হতে অস্বাভাবিক পানি উত্তোলনের ফলে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্থিতিতল প্রতি বৎসর শূন্য দশমিক ৫ থেকে ১ মিটার নীচে নেমে যাচ্ছে। ফলে ভূ-গর্ভস্থ পানির উপর বিরূপ প্রভাব তৈরি হচ্ছে।
তিনি বলেন, তাই রাজশাহী মহানগরীর পানির কভারেজ ৭১ শতাংশ হতে ১০০ শতাংশ উন্নীতকরণের জন্য চীন সরকারের আর্থিক সহায়তায় জি টু জি ভিত্তিতে ভূ-উপরিস্থ পানি শোধনাগার নির্মাণের জন্য এই প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।তিনি জানান,প্রকল্পের সুফল নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী রাজশাহী সিটি করপোরেশন এলাকার বাইরেও পানি সরবরাহ করার নির্দেশনা দিয়েছেন।
রাজশাহী ওয়াসার ভূ-উপরিস্থিত পানি শোধনাগার নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৬২ কোটি ২২ লাখ টাকা।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রাম অঞ্চলে পাহাড় কাটা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন।তিনি বলেছেন,পাহাড় কাটার কারণে কোন মানুষ যেন মাটি চাপা পড়ে মারা না যায়।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ঢাকা শহরের সকল পরিচ্ছন্নতা কর্মীর বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। ঢাকা শহরে ৭ হাজার পরিচ্ছন্নতা কর্মীর মধ্যে ইতোমধ্যে ৩ হাজার কর্মীর বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আরো ১১’শ কর্মীর বাসস্থানের জন্য আজ ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মী নিবাস নির্মাণ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এই প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ২৫৪ কোটি ১০ লাখ টাকা।
এক সপ্তাহে দু’টি একনেক সভা করা প্রসঙ্গে মুস্তাফা কামাল জানান, চলতি অর্থবছরে এই পর্যন্ত ১৪টি মঙ্গলবার পাওয়া গেছে।কিন্তু আজকেরটি নিয়ে ১০টি একনেক হচ্ছে। বাকি ৪ মঙ্গলবারের মধ্যে সরকারি ছুটি এবং প্রধানমন্ত্রী বিদেশে থাকায় একনেক করা সম্ভব হয়নি। তাই চলতি সপ্তাহে আজ আবার একনেক সভা হলো।
তিনি বলেন, চলমান উচ্চ প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখতে বেসরকারিখাতে যে বিনিয়োগ দরকার,সেটা এখন হচ্ছে না। তাই সরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে।
একনেকে অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পসমূহ হলো- চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন ওয়ার্ডে সড়ক নেটওয়ার্ক উন্নয়ন এবং বাসট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ১ হাজার ২২৯ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। ফরিদপুর-ভাঙ্গা-বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা জাতীয় মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ১ হাজার ৮৬৭ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। বৈরাগীপুল (বরিশাল)-টুমচর-বাউফল (পটুয়াখালী) জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৩০২ কোটি ১৬ লাখ টাকা। ব্যবসা বাণিজ্য সম্প্রসারণের লক্ষ্যেনন্দিগ্রাম (ওমরপুর)-তালোর -দুপচাঁচিয়া-জিয়ানগর-আক্কেলপুর গোপীনাথপুর জেলা মহাসড়ক এবং নন্দীগ্রাম (কাথম) কালিগঞ্জ-রাণীনগর জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ১৭৯ কোটি ২৩ লাখ টাকা। বিদ্যমান চত্বরে ১টি বহুতল অফিস ভবন নির্মাণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৬৩ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার উন্নয়ন, চট্টগ্রাম জোন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ২ হাজার ৫৫১ কোটি ৯১ লাখ টাকা।
এছাড়া অন্যান্য প্রকল্প হলো-যশোর অঞ্চল গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয় হবে ৯৫২ কোটি ২৫ লাখ টাকা। খুলনা বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলার পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৯৩৭ কোটি ৯২ লাখ টাকা। বঙ্গবন্ধু দারিদ্র বিমোচন প্রশিক্ষণ কমপ্লেক্স(বর্তমান বাপার্ড),কোটালীপাড়া, গোপালগঞ্জ এর সম্প্রসারণ, সংস্কার ও আধুনিকায়ন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৩৪৪ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। পরিবেশ বান্ধব কৌশলের মাধ্যমে নিরাপদ ফসল উৎপাদন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ১৭২ কোটি ১৩ লাখ টাকা। বৃহত্তর ঢাকা জেলা সেচ এলাকা উন্নয়ন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ১৩৬ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। রংপুর জেলার মিঠাপুকুর, পীরগাছা, পীরগঞ্জ ও রংপুর সদও উপজেলায় যমুনেশ^রী, ঘাঘট ও করতোয়া নদীর তীর সংরক্ষণ ও নদী পুন:খনন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ১৩৪ কোটি ৯৪ লাখ টাকা।
উপকূলীয় চরাঞ্চলে সমন্বিত প্রাণী সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৫ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। দ্যা প্রজেক্ট ফর দ্যা ইমপ্রুভমেন্ট অব রিসোর্স ক্যাপাসিটিজ ইন দ্যা কোস্টাল এন্ড ইনল্যান্ড ওয়াটারস প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ২৮৭ কোটি ১৩ লাখ টাকা। সার সংরক্ষণ ও বিতরণ সুবিধার জন্য দেশের বিভিন্ন জেলায় ১৩টি নতুন বাফার গোডাউন নির্মাণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৬২৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা।