রাজশাহী-রংপুর বিভাগ-উত্তরবঙ্গ থেকে উপদেষ্টা নেই, ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ
- Nov 11, 2024
অন্তর্বর্তী সরকারে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগ তথা উত্তরবঙ্গ থেকে উপদেষ্টা না রাখাকে ‘চরম বৈষম্য’ দাবি করে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে ছাত্র-জনতা। অবিলম্বে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগ থেকে উপদেষ্টা নিয়োগসহ সকল বৈষম্য দূর করতে সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা।
রোববার শপথ গ্রহণ করেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নতুন ৩ উপদেষ্টা। আর এতে বরাবরের মতো উপদেষ্টা পরিষদে উত্তরবঙ্গকে বঞ্চিত করায় রাজধানীর রাজু ভাস্কর্যে বিক্ষোভ করেছে উত্তরবঙ্গের সাধারণ ছাত্র জনতা। রোববার (১০ নভেম্বর) রাত ৯ টায় এই বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
উপদেষ্টা পরিষদে উত্তরবঙ্গকে বঞ্চিত করার বিক্ষোভ সমাবেশে আয়োজক নাজমুল হাসান সোহাগ বলেন, ‘ড: ইউনুসের মত সর্বজন বিদীত নোবেল বিজয়ীর প্যানেলে শহীদ আবু সাইদের এলাকা থেকে কোন উপদেষ্টা না রাখায় তীব্র নিদ্রা ও প্রতিবাদ জানান। সেই সাথে অতিদ্রুত উত্তরবঙ্গের ১৬ জেলা থেকে অন্তত ৪ জন উপদেষ্টা না রাখলে ১৮,২৪ মত কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি দেন।’
সমাবেশে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মাহিন সরকার বলেন, ‘এই বিপ্লবে উত্তরবঙ্গের মানুষ তাদের জীবন বাজি রেখে এই দেশকে ২য় স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। আপনারা দেখেছেন এই আন্দোলনে উত্তরবঙ্গ থেকে প্রথম শহিদ আবু সাইদ। তার জীবনের বিনিময়ে এই আন্দোলন ফ্যাসিস্ট সরকার হাসিনার পতনে রুপ নেয়।’
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আবু সাইদ লিওন বলেন, ‘রংপুর ও রাজশাহী বিভাগ থেকে চারজন যোগ্য মানুষ খুঁজে বের করেন। যদি আপনারা না পারেন তাহলে আমাদের বলেন আমরা খুঁজে দিবো৷’
বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সহ-সমন্বয়ক আশিকুর রহমান জিম বলেন, ‘আবু সাইদের রক্তের ওপর দিয়ে যে-দেশে দ্বিতীয় স্বাধীনতা এসেছে সেই দেশে নতুন করে কেন বৈষম্য করা হচ্ছে। আমরা অতিদ্রুত উত্তরের জনপদ থেকে উপদেষ্টা দেখতে চাই।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রকিব মাসুদ বলেন, ‘আন্দোলনের মাস্টারমাইন্ড নিয়ে শুধু আমরা লাফালাফি করি। কিন্তু আমরা জুলাইয়ের স্পিরিটকে ধারণ করতে পারি নি। জুলাইয়ের স্পিরিটকে যদি আমরা ধারণ করতাম তাহলে আমাদের এই বৈষম্য দেখতে হতো না ।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী রিপন বলেন, ‘শহিদ আবু সাঈদের বুকের উপর দিয়ে যে নতুন বাংলাদেশ গঠন করা হলো সেখানে আবু সাঈদের অঞ্চলের প্রতিনিধি কোথায়?স্বাধীনতার পর থেকে বাজেট প্রণয়ন এবং বরাদ্দের ক্ষেত্রে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের মানুষের সাথে বিমাতাসুলভ আচরণ করা হয়েছে, বৃহৎ কোন শিল্প প্রতিষ্ঠান, বন্যা-খরা ব্যবস্থাপনায় কোন প্রকল্প কিংবা বহুমুখী দারিদ্র্য বিমোচনে আলাদা কোন পদক্ষেপ আজও নেওয়া হয়নি। আজকে জুলাই বিপ্লবের পর্বতসম গণআকাঙ্ক্ষা নিয়ে রাষ্ট্র সংস্কারের যে প্রক্রিয়া বর্তমানে চলমান রয়েছে তাতে রংপুর ও রাজশাহী উন্নয়ন বৈষম্য নিরসনকে একটি অগ্রাধিকারমূলক পদক্ষেপ হিসেবে গ্রহণ করা প্রয়োজন। আর সেজন্য উত্তরবঙ্গের প্রতিনিধিত্ব আবশ্যক।’
এছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কানিজ, রিফাত রেদোয়ান, জহির রায়হান, ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী রাকিব,স্টেট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী সুহাস সহ অনেকেই বক্তব্য দেন। সকলের দাবি এক ও অভিন্ন ছিলো। তারা সকলেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে উত্তরবঙ্গের জন্য জুলাই বিপ্লবকে ধারণ করতে মিনিমাম ৪ জন উপদেষ্টা ও অন্যান্য আমলা সাম্যের ভিত্তিতে অনতিবিলম্বে দাবি করেন।