রাজশাহী-৫, মনোনয়ন দৌড়ে বড় ভাইয়ের প্রতিদ্বন্দ্বি ছোট ভাই
- Nov 19, 2018
আলোকিত ডেস্ক : রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন তুলেছেন মোট ৮ জন। এদের মধ্যে রয়েছেন আপন দুই ভাই। বড় ভাই কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি সিরাজুল করিম সনু। আর ছোট ভাই দুর্গাপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও মাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোল্লা হাসান ফারুক ইমাম সুমন। বিএনপির মনোনয়ন বিক্রির প্রথম দিনেই সিরাজুল করিম সনু মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। তার বিপক্ষে প্রার্থী হতে গত শুক্রবার একই আসনে প্রার্থী হয়ে বিএনপির মনোনয়ন ফরম কিনেছেন হাসান ফারুক ইমাম সুমন। তবে দলীয় কর্মীদের কাছে মনোনয়ন উঠানোর এ খবর গোপন রাখা হয়েছে। সুমনের কাছের মানুষরাও জানেন না সে খবর।
জানা গেছে, রাজশাহী-৫ আসন থেকে আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে বিএনপি থেকে মোট ৮ জন দলীয় মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। এরা হলেন, রাজশাহী জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও এ আসনের সাবেক সাংসদ নাদিম মোস্তফা, জেলা বিএনপির সহ সভাপতি নজরুল ইসলাম মন্ডল, বিএনপির বেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু বকর সিদ্দিক, বিএনপি নেতা ইসফা খাইরুল হক শিমুল, দুর্গাপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম সাকলাইন, বিএনপি নেত্রী মাহমুদা হাবিবা, কৃষকদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি সিরাজুল করিম সনু ও সনুর ছোট ভাই দুর্গাপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও মাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোল্লা হাসান ফারুক ইমাম সুমন।
এই ৮ জন প্রার্থীর মধ্যে সিরাজুর করিম সনু ও হাসান ফারুক ইমাম সুমন আপন সহদর। তারা দুজনেই দুর্গাপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বর্তমানে জেলা বিএনপির সহ সভাপতি মোল্লা আব্দুল ওয়াহেদের ছেলে। মোল্লা আব্দুল ওয়াহেদ এক সময় দুর্গাপুর উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি ছিলেন। ২০০৮ সালের আগ পর্যন্ত তিনি জাতীয় পার্টির সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে মোল্লা আব্দুল ওয়াহেদ জাতীয় পার্টি ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগদানের চেষ্টা করেন। কিন্তু রাজাকার তকমা থাকায় আওয়ামী লীগে যোগদান করতে পারেননি তিনি। গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের কিছুদিন পূর্বে বিএনপিতে যোগদেন। তবে কার হাত ধরে বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন সে বিষয়টিও সুস্পষ্ট নয় বিএনপির নেতাকর্মীদের কাছে।
এদিকে, মোল্লা আব্দুল ওয়াহেদের বড় ছেলে বর্তমানে কৃষক দলের কেন্দ্রীয় নেতা সিরাজুল করিম সনু নিজেও এক সময় আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে দলীয় মনোনয়নের জন্য বিভিন্ন জায়গায় ধরনা দিয়েছেন। ২০০১ সালে চার দলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর সনু আওয়ামী লীগের প্রার্থী হওয়ার জন্য বিভিন্ন জায়গায় ছুটে বেড়িয়েছেন। এরপর সেনা সমর্থিত তত্বাবধায়ক সরকার দেশ দখলে নিলে মাঠ ছেড়ে নিরুদ্দেশ হন সনু। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে দেশে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও আর দেখা মেলেনি সনুর। ২০১৪ সালের নির্বাচনেও তার কোন হদিস মেলেনি। হঠাৎ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হয়ে এলাকায় পোস্টার ব্যানারে ছেয়ে দেন। আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে সনু অনেকটা ঢাকঢোল পিটিয়ে মনোনয়ন ফরম কিনলেও ছোট ভাই সুমন কিনেছেন অত্যন্ত গোপনে। দলীয় নেতাকর্মীতো দুরের কথা কাছের মানুষরাও জানেন না সুমনের মনোনয়ন ফরম কেনার খবর।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে সিরাজুল করিম সনু বলেন, এটা রাজনৈতিক কৌশল। এর বেশি কিছু আপাতত বলতে চাচ্ছিনা। তবে হাসান ফারুক ইমাম সুমনের ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।