• Saturday, December 21, 2024

সোনামসজিদে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীরের স্মৃতিসৌধে জেলা প্রশাসন-মুক্তিযোদ্ধাসহ সকলের পুস্পার্ঘ অর্পণ

  • Dec 14, 2018

Share With

নিজস্ব প্রতিনিধি॥ ১৪ ডিসেম্বর, শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীরের ৪৭তম শাহাদৎ বার্ষিকী উপলক্ষে (শুক্রবার) মহানন্দা নদীর পাড়ে শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীরের শহীদ স্থানে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সড়ক ভবন চত্বরে অবস্থিত স্মৃতিসৌধে জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ড, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে পুস্পার্ঘ অর্পণের মাধ্যমে বাংলার এই বীর সন্তানকে শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে। এসময় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।

সকালে পুস্পার্ঘ অর্পণকালে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব রুহুল আমিন, মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মোস্তাক আহমেদসহ অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাগণ, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট দেবেন্দ্র নাথ উরাঁও, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এ.কে.এম তাজকির উজ জামানসহ নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটগণ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব আলম খান পিপিএম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ইকবাল হোছাইন, এ.এস.পি মো. আব্দুল হাই সরকার, সদর থানার অফিসার ইনচার্জ জিয়াউর রহমান পিপিএম, জাতীয় মহিলা সংস্থার জেলা শাখার চেয়ারম্যান এ্যাড. ইয়াসমিন সুলতানা রুমাসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ মানুষ।

শেষে বাংলার এই বীর সন্তানের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে সোনামসজিদ চত্বরে শহীদ জাহাঙ্গীরের মাজারে পুস্পার্ঘ অর্পণ, মাজার জিয়ারত, দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। সেখানে জেলার মুক্তিযোদ্ধাগণ উপস্থিত হন।

উল্লেখ্য, বাঙলা মায়ের দামাল সন্তান বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালের এই দিনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের পার্শ্বে মহানন্দা নদীর তীরবর্তী গ্রাম রেহায়চর এলাকায় সংগঠিত হয় এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ। পাকহানাদার বাহিনীর সাথে সুম্মুখযুদ্ধে ধ্বংস করে দেয় শত্রু বাহিনীর ১৮টি ট্রেঞ্চ ও ২০ থেকে ২২ টি বাংকার। শত্রুমুক্ত হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জ।

 

১৩ ডিসেম্বর বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর শহর মুক্ত করতে কয়েকটি নৌকায় মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে রেহায়চর এলাকায় যুদ্ধের প্রস্তুতি নেন। সম্মুখযুদ্ধে একের পর এক পরাস্ত করতে থাকেন শত্রু বাহিনীকে। ১৪ ডিসেম্বর রাতের আধার কেটে সকালে সূর্য ওঠার আগেই নির্ভিক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার জাহাঙ্গীর সহযোদ্ধাদের নিয়ে বীরদর্পে এগিয়ে চলেন এবং ধ্বংস করে দেন শত্রু বাহিনীর ১৮টি ট্রেঞ্চ ও ২০ থেকে ২২ টি বাংকার।

জাহাঙ্গীরের দুসাহসিক ও দুরন্ত আক্রমণে শত্রু বাহিনী তাদের আস্তানা ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। রেহায়চর ঘাটের কাছেই শত্রু বাহিনীর সর্বশেষ বাংকারটি দখল করতে অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে এগোতে থাকার সময় হটাৎ শত্রু বাহিনীর একটি গুলি এসে লাগে বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীরের কপালে। লুটিয়ে পড়েন মাটিতে বাংলার এই বীর সন্তান এবং সেখানেই শাহাদাত বরণ করেন। পরের দিন শহীদ ক্যাপ্টেন জাহাঙ্গীরকে দাফন করা হয় হযরত শাহ নেয়ামতুল্লাহ (রহঃ)-এর পুণ্যভূমি বাংলার পুরাতন রাজধানী গৌড়ের ঐতিহাসিক সোনামসজিদ চত্বরে।