• Friday, January 31, 2025

বিজিবি-বিএসএফ সম্মেলনে সীমান্ত হত্যা বন্ধসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

  • Jan 29, 2025

Share With

ভারতের নয়াদিল্লীতে বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের সীমান্ত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১৭ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি। এ সম্মেলনে সীমান্ত হত্যা বন্ধসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হবে।

আজ বুধবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ে সীমান্ত সম্মেলন সংক্রান্ত এক সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী একথা জানান ।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ভারতের সঙ্গে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সময়ে হওয়া সব ধরনের অসম চুক্তি নিয়ে আলোচনা হবে।

তিনি বলেন, ২০১১ সালে ভারতের সাথে বাংলাদেশের তিন বিঘা ও দহগ্রাম করিডর নিয়ে একটি অসম চুক্তি হয়েছে। তাছাড়া মহিষাশন (ভারত)-কুলাউড়া (বাংলাদেশ) আন্তঃদেশীয় রেলপথের কুলাউড়া রেলস্টেশন সীমান্ত থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার ভিতরে অবস্থিত। আমরা তাদেরকে আমাদের সীমান্তের তিন কিলোমিটার ভিতরে আসতে দেব না। সেখানে সীমান্তের সন্নিকটে কাস্টমসসহ একটি ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট নির্মাণের প্রস্তাব করা হবে।

তিনি বলেন, সীমান্তবর্তী এলাকায় ভারতীয়রা অনেক সময় মাদক তৈরি করে। তারা ফেন্সিডিলগুলো ওষুধ হিসেবে বানাচ্ছে বললেও আসলে এটা মাদক হিসেবেই বানানো হয়।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এছাড়াও উভয় দেশের প্রয়োজনে শূন্য লাইন হতে ১৫০ গজের মধ্যে যে কোন উন্নয়নমূলক কাজ সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে একে-অপরের সম্মতি গ্রহণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এগুলো এক পক্ষে করার নিয়ম নাই। যদিও তারা এভাবেই করতে চায়। উন্নয়নমূলকভাবে একটা মসজিদ বা মন্দির করতে হলে দুই দেশের সম্মতি প্রয়োজন হয়। আগামীতে কিছু করতে হলে যেন তারা সম্মতি নেয়-এ বিষয়টিতে গুরুত্ব দেওয়া হবে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ভারতে অনুষ্ঠেয় সীমান্ত সম্মেলনে বিএসএফ বা ভারতীয় নাগরিক ও দুষ্কৃতকারী কর্তৃক সীমান্ত হত্যা ও নিরস্ত্র বাংলাদেশী নাগরিকদের ওপর গুলি চালানো বা আহত করা বন্ধ করা নিয়েও আলোচনা করা হবে।

মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, সম্মেলনে বিএসএফ বা ভারতীয় নাগরিক কর্তৃক বাংলাদেশি নাগরিকদের ধরে নিয়ে যাওয়া বা আটক করা বন্ধ করতে আলোচনা করা হবে। বিএসএফ বা ভারতীয় নাগরিক কর্তৃক সীমানা লঙ্ঘন বা অবৈধ পারাপার অথবা অনুপ্রবেশ বন্ধে গুরুত্ব দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, ভারত থেকে বাংলাদেশে ইয়াবা ও ফেন্সিডিলসহ বিভিন্ন প্রকার মাদকদ্রব্য, অস্ত্র, গোলাবারুদ ও বিস্ফোরক দ্রব্য পাচার প্রতিরোধ করতে গুরুত্ব দেওয়া হবে।

উপদেষ্টা বলেন, এছাড়া আগরতলা থেকে আখাউড়ার দিকে বর্জ্য পানি প্রবাহিত হয়, এ রকম চারটি খালে পানি শোধনাগার স্থাপন কারার বিষয় আলোচনা হবে।

তিনি বলেন, সম্মেলনে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী নদীসমূহের পানির সুষম বন্টন, নদী হতে পানি উত্তোলন, পানি চুক্তি বাস্তবায়ন ও রহিমপুর খালের মুখ পুনঃউন্মুক্তকরণ নিয়ে আলোচনা করা হবে।

তিনি বলেন, বিএসএফ বা ভারতীয় নাগরিক ও দুষ্কৃতকারীরা আন্তর্জাতিক সীমানা লংঘন করে অবৈধভাবে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ রোধ করা নিয়ে আলোচনা হবে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, বিতর্কিত মুহুরীর চর এলাকায় সীমানা নির্ধারণ, বিভিন্ন এলাকায় সীমান্ত পিলারে স্থাপনের মাধ্যমে সীমানা নির্ধারণ করা নিয়ে আলোচনা করা হবে। এছাড়া ও বাংলাদেশের বর্তমান বিরাজমান পরিস্থিতি নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে গুজব ছড়ানো বা মিথ্যা সংবাদ বন্ধে আলোচনা করা হবে।

উপদেষ্টা বলেন, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা ও সীমান্ত সম্পর্কিত সমস্যা সমাধানের জন্য কার্যকর সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা কার্যকরভাবে বাস্তবায়নে আলোচনা করা হবে।

তিরি আরো বলেন, সম্মেলনে পারস্পারিক আস্থা ও সৌহার্দ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ বিষয়ে আলোচনা করা হবে।

উল্লেখ্য, ১৭ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ভারতের নয়াদিল্লীতে ৫৫তম বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ে সীমান্ত সম্মেলনে বিজিবি’র প্রতিনিধি ছাড়াও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ জরিপ অধিদপ্তর, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর এবং যৌথ নদী কমিশনের প্রতিনিধিগণ অংশ নেবেন।

সূত্র: বাসস