ছাগল উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে চতুর্থ স্থানে
- Oct 14, 2018
ছাগল উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশে^ চতুর্থ স্থানে উঠে এসেছে। জাতিসংঘের ফুড এ্যান্ড এগ্রিকালচারাল অর্গানাইজেশন (এফএও) ও আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তির মূল্যায়নে বাংলাদেশের ব্ল্যাক বেঙ্গল গোট বিশে^র অন্যতম সেরা জাত বিবেচিত হয়েছে। বিশে^ যে পাঁচটি দেশে দ্রুত হারে ছাগল উৎপাদন বাড়ছে বাংলাদেশ তার অন্যতম। এক সময় খুলনা বিভাগের কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ও আশপাশের চার জেলায় ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল পালন ছিল বেশি। বর্তমানে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের প্রায় প্রতিটি জেলায় ব্ল্যাক বেঙ্গলের উৎপাদন বেড়েছে। প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের হিসাব, দেশে লালন-পালন হওয়া ছাগলের সংখ্যা প্রায় পৌনে তিন কোটি। বছরে বিক্রিযোগ্য হয় এক কোটিরও বেশি। যার ৭০ শতাংশ ব্ল্যাক বেঙ্গল।
বগুড়ার অতিরিক্ত প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান বলেন, ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের প্রজনন ক্ষমতা বেশি। বছরে দুইয়ের অধিক (কখনও একসঙ্গে চারটি পর্যন্ত) বাচ্চা প্রসব করে। এই জাতের ছাগলকে আবদ্ধ অবস্থায় পালন করা যায় না। প্রতিদিন অনেকটা সময় ধরে তৃণভূমিতে চরাতে হয়। ছাগল অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক হওয়ায় শহরাঞ্চলের অনেকে বাসাবাড়িতে এই ছাগল পালনের চেষ্টা করেছে। ধরে রাখতে পারেনি। গ্রামাঞ্চলই ছাগল পালনের উর্বর ভূমি। বিশেষ করে উঁচু এলাকায় ছাগল স্বাচ্ছন্দ্যে থাকে। একটা সময় যমুনার পশ্চিম প্রান্তে লম্বা কানের এক ধরনের ছাগল পালন হতো। যা রাম ছাগল নামে পরিচিত। রাম ছাগল বছরে একটির বেশি বাচ্চা দিতে না পারায় এর পালন কমেছে। অন্য দিকে ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল কম সময়ে উচ্চতা বেড়ে হৃষ্টপুষ্ট হওয়ায় তাড়াতাড়ি হাট বাজারে তুলে বিক্রি করা যায়। একেকটি ব্ল্যাক বেঙ্গল ৩ থেকে ৪ ফুট উঁচু হয়। এতে পালনকারী অধিক লাভবান হয়। গ্রামের অনেক গৃহস্থ এবং কৃষক স্ত্রী ও পুরুষের এক জোড়া ব্ল্যাক বেঙ্গল পালন করে বছরে তিন থেকে চারটি ছাগল পেয়ে তাড়াতাড়ি ছাগলের খামার তৈরি করতে পারে। প্রতিটি ছাগলের মাংস হয় ১২ থেকে ১৬ কেজি পর্যন্ত। ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের চামড়ার দাম এবং বিদেশীদের কাছে চামড়ার কদর বেশি। এক চামড়া ব্যবসায়ী জানান, ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাড়া অন্য ছাগলের চামড়ার দাম পাওয়া যায় না।
প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের এক সূত্র জানায় ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল পালন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। বছর তিনেক হয় কয়েকটি বেসরকারী সংস্থা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এবং উত্তরাঞ্চলে ছাগল লালন-পালন নিয়ে কাজ করছে। কিভাবে উন্নত জাত পাওয়া যায় এ নিয়েও গবেষণা করছে।
একটি সংস্থার হিসাবে কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও রাজশাহীতে প্রায় ২০ হাজার খামারে অন্তত ৫০ লাখ ছাগল পালন হচ্ছে। যার বেশিরভাগই ব্ল্যাক বেঙ্গল। বগুড়া প্রাণিসম্পদ অধিদফতর সূত্র জানায়, বছর কয়েক আগেও বগুড়ায় ছাগল পালনের খামার ছিল প্রায় তিন শ’। বর্তমানে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৭শ’। দিন দিন বাড়ছে। প্রতিটি খামারেই লালন-পালন হচ্ছে ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল। – সমুদ্র হক