রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ভোট উৎসব আজ
- Jul 30, 2018
পঞ্চমবারের মত রাজশাহী সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আনন্দমুখর পরিবেশে রাজশাহী মহানগরীর ভোটারগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন।
আজ সোমবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোট গ্রহণ চলবে। অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটাররা যাতে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন নির্বাচন কমিশন (ইসি) ইতোমধ্যে এর সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। নগরীর প্রতিটি কেন্দ্রে ইতোমধ্যেই ব্যালট পেপার, ব্যালট বাক্সসহ নির্বাচনি সামগ্রী পৌঁছে দেয়া হয়েছে।
নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনে ৩ লাখ ১৮ হাজার ১৩৮ জন ভোটার রয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৫৬ হাজার ৮৫ জন ও নারী ভোটার ১ লাখ ৬২ হাজার ৫৩ জন।
এবার ১৩৮টি কেন্দ্রের মধ্যে ১১৪টিকেই ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে নির্বাচন অফিস এই কেন্দ্রগুলোকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ কেন্দ্র হিসেবে উল্লেখ করছে। এজন্য কেন্দ্রগুলোতে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।
রাজশাহী সিটিতে ৩০টি সাধারণ ও ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড রয়েছে। এখানে ১৩৮টি ভোট কেন্দ্র ও ১ হাজার ২৬টি ভোট কক্ষ রয়েছে। রাসিক নির্বাচনে এবার দুইটি কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করা হবে।
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের এই নির্বাচনে মেয়র পদে ৫ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৬০ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ৫২ জন অংশ নিচ্ছেন। তবে জাপার মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনকে সমর্থন জানিয়ে নির্বাচনি মাঠে নৌকার সমর্থনে কাজ করছেন।
নির্বাচনের দিন ভোট দেয়ার সুবিধার্থে সংশ্লিষ্ট এলাকায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। নির্বাচনে ভোটাররা যাতে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন এজন্য কমিশন সব ব্যবস্থাই সম্পন্ন হয়েছে।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছেন, ভোটাররা যাতে নির্বিঘেœ ভোট কেন্দ্রে এসে ভোট দিতে পারেন তা নিশ্চিত করা হবে। নির্বাচনে কোনো ধরনের অনিয়ম বা নির্বাচনি কর্মকর্তাদের যেকোনো ধরনের শৈথিল্য বরদাস্ত করা হবে না বলেও হুশিয়ারি দেয়া হয়েছে।
রাসিক নির্বাচনে সুষ্ঠু পরিবেশ ও নিরাপত্তা রক্ষার্থে ৩ হাজার ৮৪০ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মাঠে কাজ করবেন। এর মধ্যে থাকছে ৯৫০ জন পুলিশ, ৪৫০ জন র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-র্যাব, ৪৫০ জন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি ও ১ হাজার ৯৯০ জন আনসার সদস্য। তারা নির্বাচনি মাঠে দায়িত্ব পালন করবেন। শনিবার সকাল থেকেই রাসিকের নির্বাচনি এলাকাগুলোতে র্যাব ও বিজিবি টহল শুরু করেছে।
র্যাব-৫-এর উপ-অধিনায়ক আশরাফুল ইসলাম জানান, চার শতাধিক র্যাব সদস্য এর মধ্যে টহল দিতে শুরু করেছেন। ৩১ জুলাই পর্যন্ত তাদের মাঠে থাকার কথা। পরিস্থিতি অস্বাভাবিক হলে তা স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত র্যাব মাঠে থাকবে।
বিজিবি-১ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শামীম মাসুদ আল ইফতেখার বলেন, জননিরাপত্তার জন্য ১৯ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। এরা টহল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে। শনিবার সকাল থেকে বিজিবি সদস্যরা নির্বাচনি এলাকায় টহল শুরু করেছেন। তাঁরা ৩১ জুলাই পর্যন্ত মাঠে থাকবেন।
শনিবার দিনগত রাত ১২ টার পর সব ধরনের প্রচারণা বন্ধ হয়েছে। শনিবার দিনের প্রচারণায় মুখর নগরী রোববারে একেবারে থমথমে পরিবেশ সৃষ্টি করে। ১৮ দিনের শব্দ দূষণে আর স্লোগান অস্থির নাগরিক কর্ণকুহরে শান্তি আর স্বস্তি নেমে আসে। আজ সোমবার সেই স্বস্তির ধারাবাহিকতায় পুরো নগরী জুড়েই শুরু হয়েছে প্রাণের উৎসব ভোট উৎসব। সার্বজনিন উৎসব। আর উৎসবের চেয়ে এই উৎসবের উচ্ছ্বাস-হিল্লোল, আগ্রহ, কৌতুহল মোটেও কম নয়, বরং অনেক ক্ষেত্রেই বেশি। ভোটারদের প্রত্যাশা- উৎসব সুষ্ঠু হোক, শান্তিপূর্ণ হোক, আনন্দের হোক।