• Tuesday, April 23, 2024

অপশক্তি ডাকার বাহানা ॥ ভোট পেছানোর দাবির নেপথ্যে

  • Nov 07, 2018

  • ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপ শেষে সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের
  • প্রধানমন্ত্রীর অধীনে নির্বাচনে অংশ নিতে সম্মত ২৫ দল

ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় দফা সংলাপে সঙ্কটের বরফ গলেনি। অর্থাৎ উভয়পক্ষের মধ্যে সমঝোতা না হওয়ায় আন্দোলনের পথে ফ্রন্ট নেতারা। সংলাপ শেষে ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সাত দফার আলোকে ঐক্যফ্রন্টের উত্থাপিত বেশির ভাগ দাবি আমরা মেনে নিয়েছি। সাংবিধানিক ও বিচারিক বিষয়ে সরকারের করণীয় কিছু নেই। সংবিধানের বাইরে যাব না বলেও ফ্রন্ট নেতাদের সাফ জানিয়ে দেয়া হয়েছে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে। আলোচনা ফলপ্রসূ না হলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারও ঐক্যফ্রন্টকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার আহŸান জানিয়ে বলেছেন, আপনারা নির্বাচনে অংশ নিন। সুষ্ঠু নির্বাচন করে দেখিয়ে দেব, আমি যা বলছি সেটা সত্যি।

ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে দ্বিতীয় পর্বের সংলাপে সাত দফার আলোকে সুনির্দিষ্ট চারটি প্রস্তাব দেয় ড. কামাল হোসেন ও বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। এগুলো হলো : সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন, ১০ সদস্যের নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ গঠন, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন এবং কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মুক্তি।

বুধবার বেলা ১১টা ১০ মিনিটে গণভবনের ব্যাংকোয়েট হলে শুরু হওয়া এই সংলাপে দুই পক্ষেরই ১১ জন করে প্রতিনিধি অংশ নেন। এটি শেষ হয় দুপুর ২টার কিছু পরে। প্রায় তিন ঘণ্টা রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয় উভয়পক্ষের মধ্যে। রাতে আরও ২১টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করেন আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের নেতারা। বুধবার দু’দফা সংলাপের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সংলাপের পর্দা নামল।

২৫ দলের নেতৃবৃন্দ অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়ে বলেন, তারা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নির্বাচনকালীন সরকারে সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে সম্মত। সংলাপ শুরুর পর প্রধানমন্ত্রীকে নৌকা উপহার দেন সাবেক বিএনপি নেতা নাজমুল হুদা। অন্য নেতৃবৃন্দ প্রধানমন্ত্রীকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।

ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সংলাপে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট যে দাবি করেছে, তা মূলত নির্বাচন পেছানোর বাহানা। বুধবার সংলাপ শেষে গণভবন থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের কাছে এমন মন্তব্য করেন তিনি। এদিকে ঐক্যফ্রন্ট নেতারা বলেছেন, দ্বিতীয় দফা সংলাপেও তারা কোন সমাধান পাননি। তাই আন্দোলনের পাশাপাশি ফের আলোচনাও হতে পারে।

গণভবন থেকে বেরিয়ে ঐক্যফ্রন্টের নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, দ্বিতীয় দফা সংলাপেও কোন সমাধান পাইনি। তিনি বলেন, আলোচনা মনঃপুত হয়নি। সংলাপে কোন সমাধান আসেনি। গণভবন থেকে বেরিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলগমগীর বলেন, সংলাপ সফল হয়নি।

ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের ওবায়দুল কাদের বলেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা নির্বাচন পিছিয়ে সরকারের মেয়াদপূর্তির পরের ৯০ দিনে তত্ত‍াবধায়ক ব্যবস্থার আদলে ভোট করার দাবি তোলেন। এর পেছনে তারা ‘অপশক্তিকে’ ফেরানোর বাহানা দেখতে পাচ্ছেন।

তিনি সাফ জানিয়ে দেন, সংবিধানের বাইরে যাব না। পরিষ্কার করে বলে দিয়েছি, এটা মেনে নেয়ার মতো সংবিধান সম্মত কোন কারণে নেই। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে গত ১ নবেম্বর সাড়ে তিন ঘণ্টার সংলাপে সাত দফা দাবির বিষয়ে কোন সমাধান না আসায় বুধবার ‘সীমিত’ পরিসরে দ্বিতীয় দফার এই সংলাপে বসেন ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। ঐক্যফ্রন্টের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রথমে প্রধানমন্ত্রী ফ্রন্ট নেতাদের স্বাগত জানান। এরপর সূচনা বক্তব্য রাখেন। পরে ফ্রন্ট নেতাদের মধ্য থেকে কামাল হোসেন দাবিদাওয়া তুলে ধরেন।

সংলাপ শেষে ওবায়দুল কাদের গণভবনের বাইরে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের বলেন, ঐক্যফ্রন্টের নেতারা তাদের সাত দফা দাবি নিয়ে আলোচনা করেছেন। তার মধ্যে লেভেল প্লেইং ফিল্ড তৈরি, বিদেশী পর্যবেক্ষকদের পরিদর্শনের অনুমতি, সত্যিকারের রাজনৈতিক মামলা থাকলে তা প্রত্যাহারের মতো কয়েকটি বিষয়ে আওয়ামী লীগ একমত হয়েছে।

ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনকালীন সরকারের দাবি নিয়ে কী আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে কাদের বলেন, সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। কিন্তু ঐক্যফ্রন্ট সরকারের মেয়াদ শেষে পরের তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন করার প্রস্তাব দিয়ে বলেছে, একজন প্রধান উপদেষ্টা এবং দশজন উপদেষ্টাকে নিয়ে নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে ওই নির্বাচন হতে হবে।

ওই প্রস্তাব আওয়ামী লীগ প্রত্যাখ্যান করেছে জানিয়ে কাদের বলেন, হয়ত তাদের অনেকের একটা সদিচ্ছা আছে। এটা নির্বাচন পিছিয়ে দেয়ার একটা বাহানা। এই পিছিয়ে দেয়ার মধ্য দিয়ে ফাঁকফোকর হয়ত খুলে দেয়া হচ্ছে, যেখান দিয়ে তৃতীয় কোন অপশক্তি এসে ওয়ান-ইলেভেনের মতো সেই অনভিপ্রেত-অস্বাভাবিক ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে। আমরা সবাই মনে করছি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্ধৃত করে কাদের বলেন, আমাদের দলনেতা প্রধানমন্ত্রী তাদের নেতাদের অনুরোধ করেছেন, আপনারা আসেন, সুষ্ঠু নির্বাচন করি, দেখিয়ে দেব, আমি যা বলেছি সেটা সত্যি। আমরা দেশের জনগণের সঙ্গে প্রতারণামূলক অভিসন্ধি নিয়ে কাজ করি না।

জনগণ যদি আমাকে ভোট দেয়, আমি থাকব। আপনারা জিতলে আপনারা জিতবেন। নির্বাচনে কোন প্রকার কারচুপি, জালিয়াতি হবে না। একটা ভাল নির্বাচন হবে… ফ্রি এ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশন হবে, ক্রেডিবল ইলেকশন হবে, একসেপটেবল ইলেকশন হবে। সংলাপের পরেও প্রধানমন্ত্রী ঐক্যফ্রন্টের জ্যেষ্ঠ নেতাদের আলাদাভাবে একই কথা বলেছেন বলে জানান কাদের।

তিনি বলেছেন, ফ্রি, ফেয়ার, নিউট্রাল ইলেকশন আমরা বাংলাদেশে দেখতে চাই। আজকে নির্বাচনকে পিছিয়ে দিতে গিয়ে ফাঁকফোকর গলে কোন অপশক্তিকে অনুপ্রবেশের সুযোগ দেবেন না। যেটা আপনাদের জন্য ক্ষতি ডেকে আনতে পারে, আমাদের সকলের জন্য সর্বনাশ ডেকে আনতে পারে।

আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, সংবিধান পরিপন্থী ও সাংঘর্ষিক কিছু বক্তব্য তারা নিয়ে এসেছে, যেটা গ্রহণযোগ্য নয়। সংলাপ এখানে শেষ। সিডিউল ঘোষণার পর তারা যদি কোন বিষয়ে আবার বসতে চান, আপত্তি নেই। গণভবন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, দুই পক্ষই নিজেদের দাবিতে অনড়। কোন ঐকমত্যে পৌঁছানো যায়নি। ঐক্যফ্রন্ট আবারও সংলাপের দাবি জানিয়েছে। এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। সংলাপ শেষে জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন বলেছেন, শুধু সংলাপ হয়েছে, আর কিছু নয়।

কাদের বলেন, ঐক্যফ্রন্টের নেতারা চাইছেন যে সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে পরবর্তী ৯০ দিনে নির্বাচন করার জন্য। এটা হচ্ছে মূল কথা। এ ছাড়া নির্বাচনে লেভেল প্লেইং ফিল্ড, বিদেশী পর্যবেক্ষক, রাজবন্দীদের মুক্তি। এসব বিষয়ে আমাদের নেত্রী, আমাদের দলনেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এসব দাবি মেনে নিতে আমাদের কোন আপত্তি নেই। সিডিউল ডিক্লেয়ারের পরে নির্বাচন কমিশন এগুলো করবে।

তিনি বলেন, মন্ত্রীরা নিজের এলাকায় জাতীয় পতাকা ব্যবহার করবেন না, সরকারী সুযোগ-সুবিধা নেবেন না, সার্কিট হাউস ব্যবহার করবেন না, সরকারী গাড়ি ব্যবহার করবেন না। কোন প্রকার সরকারী ফেসিলিটিস আমরা ব্যবহার করব না। অন্যান্য কোন এমপিও, তাদের কোন পাওয়ার থাকবে না। ঐক্যফ্র্রন্ট যদি প্রার্থিতা দেয় বা অন্যান্য দল যদি প্রার্থিতা দেয়, তাদের মতো আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা বা মহাজোটের প্রার্থীরা একই সুবিধা এনজয় করবেন। এর অতিরিক্ত কিছু হবে না। ইলেকশন কমিশন বিষয়টি দেখবে।

ঐক্যফ্রন্টের ১০ সদস্যবিশিষ্ট নির্বাচনকালীন সরকারের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, এটা ওই প্রক্রিয়া। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা তো আশাবাদী। একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিষয়ে আমাদের মধ্যে খোলামেলা আলোচনা হয়েছে।

সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আরেকটি বিষয় হচ্ছে, সেনাবাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার নিয়ে তারা যে কথা বলেছেন, এটা আমাদের দেশে হয় না। পৃথিবীর কোন গণতান্ত্রিক দেশে এ ধরনের নিয়ম চালু নেই। তবে সেনাবাহিনী মোতায়েন থাকবে স্ট্রাইকিং হিসেবে। তারা যেখানেই প্রয়োজন, লোকাল এ্যাডমিনিস্ট্রেশনের সহায়তায় তারা যখনই, যেখানে চাইবে, সেখানে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনাবাহিনী নিয়োজিত থাকবে। এখন তারা যে দাবি দিয়েছেন, সাত দফা দাবি দিয়েছেন-সাত দফার বেশির ভাগই মেনে নিতে আমাদের নেত্রী দলনেতা শেখ হাসিনা সম্মত হয়েছেন।

খালেদা জিয়ার বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ঐক্যফ্রন্টের নেতারা খালেদা জিয়ার মুক্তির ব্যাপারে জামিন চেয়েছেন, তারা ওভাবে মুক্তি চাননি। আপনারাই (গণমাধ্যমকর্মীরা) প্যারোল বানিয়েছেন। তারা কিন্তু প্যারোল বলেননি। খালেদা জিয়ার মামলা তো এই সরকার করেনি। এটা করেছে তত্ত¡াবধায়ক সরকার। এখন খালেদা জিয়ার জামিন বা মুক্তির বিষয় আদালতের ব্যাপার। তিনি বলেন, কিছু কিছু প্রস্তাব আছে যা আমাদের মেনে নিতে আপত্তি নেই। তারা তো প্রস্তাব দিচ্ছেন সংবিধানের মধ্যেই, কিন্তু বিষয়টি তো সংবিধানের বাইরে। এখানে একটা বিরাট গ্যাপ আছে তাদের প্রস্তাবের মধ্যে। তারপরও আমার কাছে মনে হলো, যাওয়ার সময় তারা নমনীয় হয়েছে, তাদের কথাবার্তা-আচরণে।

ঐক্যফ্রন্ট কঠোর কর্মসূচীতে গেলে আওয়ামী লীগ কী করবে? এ প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা বলেছেন, তারা কঠোর কর্মসূচীতে যাবেন, রোডমার্চ করবেন। এগুলো তো গণতান্ত্রিক কর্মসূচী। এগুলো তো আমরাও করেছি। কিন্তু এই যে পদযাত্রা আর রোডমার্চ করতে গিয়ে যদি বোমাবাজি করে বা জ্বালাও-পোড়াও করে, সেই পরিস্থিতিতে আমরা বসে থাকব না।

সংলাপের শুরুতে সূচনা বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মঙ্গলবার শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করায় ঐক্যফ্রন্টকে ধন্যবাদ জানান। গত সংলাপের মতো বুধবারও প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে অতিথিদের জন্য খাবারের আয়োজন করা হয়। চা-কফিসহ অন্তত ১০ ধরনের খাবারের আইটেম রাখা হয় মেন্যুতে। সূত্র জানায়, খাবারের মেন্যুতে ছিল স্ন্যাক্স, চিংড়ি ভাজা, স্যান্ডউইচ, নুডুলস, চিকেন রোল, ভেজিটেবল রোল, ফিশ কাটলেট, ফল, বিভিন্ন ফলের জুস এবং চা ও কফি। এর আগে ৩১ অক্টোবরও গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ঐক্যফ্রন্টের সংলাপ হয়।

উভয় পক্ষের ২২ প্রতিনিধি ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৪ দলের প্রতিনিধি দলে ছিলেন আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, শেখ সেলিম, মতিয়া চৌধুরী, ওবায়দুল কাদের, এ্যাডভোকেট আনিসুল হক, এ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন, স ম রেজাউল করিম, হাসানুল হক ইনু ও রাশেদ খান মেনন।

এছাড়া ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের মধ্যে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, জেএসডির সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু, গণফোরামের কার্যকরী সভাপতি এ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের আহŸায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, নাগরিক ঐক্যের উপদেষ্টা এসএম আকরাম, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার কেন্দ্রীয় নেতা সুলতান মোহাম্মদ মনসুর অংশগ্রহণ করেছেন।

মামলার তালিকা দিল বিএনপি ॥ সংলাপে প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস অনুযায়ী দেশব্যাপী নেতাকর্মীদের নামে মামলার তালিকা জমা দিয়েছে বিএনপি। বুধবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বিএনপির সহ-দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু এ তালিকা জমা দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা আবদুল হামিদ এই তালিকা গ্রহণ করছেন বলে বিএনপি চেয়ারপার্সনের প্রেস উইং কর্মকর্তা শায়রুল কবীর খান এ তথ্য জানিয়েছেন। তাইফুল ইসলাম টিপু বলেন, ৫ হাজারের অধিক গায়েবি মামলাসহ ১ হাজার ৪৬ মামলার তালিকা দেয়া হয়েছে। দুই-এক দিনের মধ্যে বাকি তালিকা জমা দেয়া হবে।

রাতে ২৫ দলের সঙ্গে সংলাপ ॥ বুধবার রাতে ২৫টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করে আওয়ামী লীগ। রাত সাড়ে সাতটায় গণভবনে সংলাপ শুরু হয়। এসব দলের মধ্যে ছিল, জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট (এনডিএ), বাংলাদেশ জাতীয় জোট (বিএনএ), বাংলাদেশ সমাজ উন্নয়ন পার্টি (বিএসডিপি), বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ঐক্যফ্রন্ট, ন্যাপ ভাসানী, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি), বাংলাদেশ ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট (এনডিএফ), যুক্তফ্রন্ট, গণফ্রন্ট ও প্রগতিশীল জোট, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক মুক্তি আন্দোলন (বিজিএমএ), জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট (এনডিএ), বাংলাদেশ সত্যব্রত আন্দোলন, ঐক্য ন্যাপ, ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক পার্টি (কেএসপি), প্রগতিশীল জাতিয়তাবাদী দল (পিএনপি), প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল (পিডিপি), বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা ঐক্যজোট, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ঐক্যজোট, তৃণমূল জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন, জাতীয় স্বাধীনতা পার্টি (জেএসপি), বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি ও বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট।

সরকারের ধারাবাহিকতায় উন্নয়ন ॥ সরকারের ধারাবাহিকতা থাকায় উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, জনগণ ভোট দিলে সরকারে থাকব, না দিলে নেই। তবে, ক্ষমতায় যেই আসুক, উন্নয়নের ধারা যেন অব্যাহত থাকে। বুধবার রাতে সন্ধ্যায় গণভবনে ২৫টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আওয়ামী লীগের চলমান সংলাপে তিনি এই আহŸান জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোন সঙ্ঘাত ছাড়াই প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখে সমুদ্র বিজয় এবং ভারতের সঙ্গে ছিটমহল বিনিময় সম্পন্ন হয়েছে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। এই অর্জন আমাদের ধরে রাখতে হবে। সরকার প্রধান বলেন, জনগণ ভোট দিলে পুনরায় সরকার গঠন করব, না দিলেও আফসোস নেই। যারাই ক্ষমতায় আসুক, তারা যেন উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখে। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এর আগে নির্বাচনী ইশতেহারে দিন বদলের সনদ দিয়েছিলাম। আমরা সে সনদ বাস্তবায়ন করেছি।

প্রকাশিত : ৮ নভেম্বর ২০১৮