• Friday, March 29, 2024

একাধিক মন্ত্রী চান রাজশাহী বিভাগের মানুষ

  • Jan 06, 2019

একাধিক মন্ত্রী চান রাজশাহী বিভাগের মানুষ। রাজশাহী বাসীর প্রাণের দাবি রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনকে পূর্নমন্ত্রীর মর্যাদা দেয়া। পাশাপাশি বিভাগের বেশ কয়েকজন এমপিকে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী করার দাবি উঠেছে। পিছিয়ে থাকা উত্তরবঙ্গের উন্নয়নে এসব দাবি তুলেছেন উত্তরাঞ্চলের মানুষ।

শেখ হাসিনার দশম সংসদে রাজশাহী বিভাগে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী হিসেবে ছিলেন জাতীয় নেতা শহীদ এম মনসুর আলীর সন্তান স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী ইমাজ উদ্দীন প্রামানিক, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, ভূমি মন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ ডিলু।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারন সম্পাদক অধ্যাপক ড. শাহ আজম শান্তনু বলেন, রাজশাহীর উন্নয়ন হলেই উত্তরবঙ্গের উন্নয়ন হবে। এটি একটি পুরনো জনপদ। এখানে সরকারের অনেকগুলো উন্নয়ন প্রকল্প চলছে। রাজশাহীকে আরো এগিয়ে নিতে হলে মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনকে পূর্নমন্ত্রীর মর্যাদা দিতে হবে। তিনি রাজশাহীর উন্নয়ন কারিগর এবং শহীদ পরিবারের সন্তান।

তিনি বলেন, একই সঙ্গে রাজশাহী-০২ সদর আসনের সাংসদ ফজলে হোসেন বাদশা, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, সাবেক প্রতিমন্ত্রী ওমর ফারুক চৌধুরীকেও মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী রাখা যেতে পারে।

এছাড়া প্রথমবারের মত নির্বাচিত সাংসদ বিএমএ ও স্বাচিপ নেতা ডা. মনসুর রহমান, তৃতীয়বার নির্বাচিত সাংসদ এনামুল হক ও দ্বিতীয়বার নির্বাচিত সাংসদ আয়েন উদ্দীনকেও প্রতিমন্ত্রী হিসেবে রাখার দাবি উঠেছে।

রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য জিএম হিরা বাচ্চু বলেন, ডা. মনসুর বিএমএ এবং স্বাচিপ নেতা ছিলেন। তাকে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী করা হলে রাজশাহী অঞ্চলের চিকিৎসাসেবার মান আরো বৃদ্ধি পাবে।

সিরাজগঞ্জ-০১ আসন থেকে নির্বাচিত স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবেই দেখতে চান সেখানকার বাসিন্দারা। একই সঙ্গে সিরাজগঞ্জ-০২ আসন থেকে নির্বাচিত সাংসদ প্রফেসর ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্নাকেও প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান সিরাজগঞ্জবাসী।

বিএমএ সিরাজগঞ্জ জেলার সভাপতি ডা. জহিরুল হক রাজা বলেন, মোহাম্মদ নাসিমকে আমরা একই পদে পুনরায় দেখতে চাই। কারন তিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রী হয়ে ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। তার হাত ধরে হাজার কোটি টাকা ব্যায়ে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের কাজ এখনো শেষ হয়নি। এই কাজ শেষ করতে হলেও মোহাম্মদ নাসিমকে আবারো মন্ত্রী রাখা দরকার। পাশাপাশি শিল্পপার্ক, ইকোনমিক জোনসহ বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রায় ৫লাখ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য প্রফেসর হাবিবে মিল্লাত মুন্নাকে প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চাই।

সরকারের গত মেয়াদে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী ছিলেন ইমাজ উদ্দীন প্রামানিক। তবে এবার তিনি বয়সের ভারে ভারাক্রান্ত্র। অসুস্থতাও বেড়েছে। তাই এবার নওগাঁবাসী মন্ত্রী হিসেবে চাচ্ছেন নওগাঁ-০১ আসন থেকে নির্বাচিত সাধন চন্দ্র মজুমদার ও নওগাঁ-০২ থেকে নির্বাচিত দশম সংসদের সরকার দলীয় হুইপ শহীদুজ্জামান সরকারকে।

পোরশা উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আনারুল ইসলাম বলেন, যারা উন্নয়ন করেছেন এবার তাদেরকেই মন্ত্রী হিসেবে চাই। গত দুই মেয়াদে সাধন চন্দ্র মজুদার এবং শহীদুজ্জামান সরকার এলাকার অনেক উন্নয়ন করেছেন। তাই তারা মন্ত্রী হলে নওগাঁ জেলার উন্নয়ন করতে পারবে। নওগাঁ চেম্বার সভাপতি ইকবাল শাহরিয়ার রাসেলও একই মত দেন।

পাবনার আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা এবার অনেকেই শামসুর রহমান শীফ ডিলুকে আর মন্ত্রী চান না।

তাদের অভিযোগ, তার পারিবারের সদস্যরা বেপরোয়া। জামাই ঈশ্বরদী পৌরসভার মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল কালাম আজাদ মিন্টুর সাথে প্রকাশ্যে দ্বন্দ্ব, তার সমর্থকদের উপর হামলা-মামলা ও দোকানটপাট ভাংচুর, সাংবাদিক পিটুনি, প্রতিপক্ষ বিএনপি প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিবের উপর নির্বাচনের চারদিন আগে হামলার অভিযোগ তার পুত্র শিরহান শরীফ তমালের বিরুদ্ধে। কিন্তু ডিলু এসব নিয়ন্ত্রন করতে পারেননি। নিয়ন্ত্রনহীনতার সুযোগে তার পরিবার ইতিপূর্বে এলাকায় ব্যাপক ত্রাস সৃষ্টি করে।

তবে অনেকেই এবার মন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান পাবনা সদর আসন থেকে নির্বাচিত সাংসদ গোলাম ফারুক প্রিন্সকে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভপতি রেজাউল রহিম লাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে অনুরোধ করেন প্রিন্সকে মন্ত্রী পরিষদে রাখার জন্য।

পাবনা চেম্বার অব কমার্সের সিনিয়র সহসভাপতি আলী মর্ত্তুজা বিশ্বাস সনি বলেন, প্রিন্স সদর আসন থেকে তিনবার এমপি হয়েছেন। পাবনা সদর আসন থেকে কখনোই মন্ত্রী হয়নি। তাই এবার তাকে মন্ত্রী করা হলে পবনা উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাবে এবং পাবনাবাসী সম্মানিত হবে।

বগুড়া-০১ আসন থেকে টানা তৃতীয়বার নির্বাচিত সাংসদ আব্দুল মান্নানকে মন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান বগুড়াবাসী। আব্দুল মান্নান ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। শেখ হাসিনার গত দুই মেয়াদের মন্ত্রী সভায় বগুড়া থেকে কারো ঠাঁই হয়নি। তাই এবার আব্দুল মান্নানের পক্ষে জোরালো দাবি উঠেছে। জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অ্যাড. রেজাউল করিম মন্টু বলেন, আব্দুল মান্নান তৃণমূল থেকে রাজনীতি করে উঠে এসেছেন। তিনি ছাত্র রাজনীতি থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করছেন। তাকে মন্ত্রী করা হলে এলাকার উন্নয়নের পাশাপাশি সংগঠন শক্তিশালী হবে।

নাটোরবাসী এবার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলককে পূর্নমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান। এছাড়া নাটোর সদর আসনের সাবেক প্রতিমন্ত্রী আব্দুল কুদ্দুসকেও মন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান।

এবার সারাদেশে আওয়ামী লীগের জয়জয়কার হলেও ব্যতিক্রম ছিলো চাপাইনবাবগঞ্জ। তিনটি আসনের মধ্যে মাত্র একটিতে বিজয়ী হয়েছেন ডা. সামিল উদ্দিন শিমুল। চাইপানবাবগঞ্জবাসী এবার তাকেও চায় প্রতিমন্ত্রী হিসেবে।

জয়পুরহাট থেকে নির্বাচিত কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনকে এবার মন্ত্রী হিসেবে দেখতে চায় জয়পুরহাটবাসী।

জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও কালাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিনফুজুর রহমান মিলন বলেন, গত দুই যুগে জয়পুরহাটবাসী কোন মন্ত্রী পায়নি। বর্তমানে এলাকার উন্নয়নের রুপকার আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন। তিনি গোলাম হয়ে মানুষের কাছে গিয়ে কাজ করেছেন। তিনি মন্ত্রী হলে এলাকার আরো উন্নয়ন হবে।