• Saturday, December 21, 2024

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবতলায় চায়ের কাপে ঝড় তুলে চলেছেন দিনেশ

  • Oct 22, 2018

Share With

ডি এম কপোত নবী : চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবতলা মোড়ে শ্রী দিনেশ হলদারের ছোট্ট একটি চায়ের দোকান। ১৯৯৬ সাল থেকে দিনেশ একটু একটু করে চায়ের কাপে ঝড় তুলে চলেছেন। দিনে দিনে পরিচিতি বেড়েছে। সেটা হয়েছে স্বাদ ও চা তৈরির গুণের কারণেই।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের কমবেশি সকলেই এক নামে দিনেশকে চেনে এবং জানে। অন্যকিছু নয় শুধুমাত্র ভাল চা তৈরি করার কারণে এটা হয়েছে। কিছুদিন আগে শেষ হয়েছে দূর্গাপুজা। পুজা উপলক্ষে সৌখিন দিনেশ দোকানের সামনে দুটি বাঁশ পুতে ঘিরে আলোর ব্যবস্থা করে।

কেন এমন লাল নীল বাতি লাগানো হয়েছে জানতে চাইলে এ প্রতিবেদককে দিনেশ জানান, ধর্ম যার যার উৎসব সবার। আমাদের হিন্দু ধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব হচ্ছে দূর্গাপুজা। কাজের কারণে তো কিছু করতে বা ঘুরতে যেতে পারি না। তাই দোকানেই উৎসবকে ঘিরে লাইটিং করেছি। দিনেশ আরো বলেন, শিবতলায় বেশ কয়েকটি পুজা মন্ডপ রয়েছে। পূজার কয়টা দিন তাই ব্যাপক লোকসমাগম হয়। বেচা বিক্রিও খুব ভাল হয়। দম ফেলার সময় পায় না। সকাল থেকে গবীর রাত পর্যন্ত দোকানের আগুনে গরম হতে থাকে খাঁটি গরুর দুধ। সে দুধ দিয়েই চা তৈরি করে বিক্রি করি। দাম হাতের নাগালের মধ্যেই।

দিনেশ আরো জানান, পূজাকে সামনে রেখে চা বানাবার জন্য চুলা ও সামনের কাপ, প্লেট রাখার জন্য নতুন করে টাইলস বসিয়েছি। পুরোটাই টাইলস দিয়ে বাঁধিয়েছি। আমি চা বিক্রি করে যা রোজগার করি তা দিয়েই আমিসহ আমার সংসার চলে। গরিব মানুষ আমি, এত টাকা নেই যে দোকন ভেঙ্গে নতুন টিন লাগিয়ে নতুন ভাবে দোকান করব।
তিনি আরো বলেন, শুনেছি আব্দুল ওদুদ এমপি গরীবের বন্ধু। অসহায়দের দুহাত ভরে সহযোগতিা করেন। এমপি ওদুদ সাহেব যদি আমার দিকে একটু নজর দেয় তাহলে আমার দোকানের টিন হয়ে যাবে। শুধু এমপি কেন অনেক বিত্তবান আছে এক নজর দেখলেই আমি ভেসে যাব। মা বাবা গত হয়েছে অনেক আগেই দিনেশের। পরিবারে ২ মেয়ে আর স্ত্রী রয়েছে। এক মেয়ে ১২ বছরের স্কুলে পড়ছে, আর এক মেয়ে ৬ বছরের ছোট্ট শিশু।


দিনেশের বাড়ি গোমস্তাপুর চৌডালার মিস্ত্রি পাড়ায়। নবাবগঞ্জের মিস্ত্রি পাড়ায় বর্তমানে বসবাস করছেন। মানুষ কেন এখানে চা খেতে ভীড় জমায় জানতে চাইলে দিনেশ হাসিমাখা মুখ নিয়ে বলেন, আমার এখানে চা ভাল লাগে, কাস্টমার ভাল ব্যবহার পাই। সে কারণেই মানুষ বেশি ভালবাসে আমাকে। দিনেশ আরো জানান, যতদিন বেঁচে আছি কর্ম করেই বেঁচে থাকতে চাই। সন্তান দুটিকে পড়ালেখা করিয়ে মানুষের মত মানুষ করাই হচ্ছে আমার এখন বড় লক্ষ। নিজ কর্ম উদ্যোমে দিনেশ চায়ের কাপে ঝড় তুলতে থাকুক এটাই আমাদের প্রত্যাশা।